বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে সঠিক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। রোববার (১১ মে) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সিদ্ধান্তটি বিলম্বিত হলেও এটি মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্তদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
“আমরা আনন্দিত যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শেষমেশ ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার করা এবং বিচার প্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন রাখা যায়,” বলেন মির্জা ফখরুল। “আমরা বিশ্বাস করি, দীর্ঘকাল ধরে গুম, খুন, নিপীড়ন ও জনগণের উপর অপশাসন চালানোর দায়ে ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগীদের বিচার করা সঠিক সিদ্ধান্ত।”
ফখরুল আরও বলেন, যদি সরকার পূর্বে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করত, তবে চাপের মুখে এক বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারত। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভবিষ্যতে এই বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে দেখবে।
“আমরা এর আগে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের পত্রে ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসার’ দাবি জানিয়েছিলাম। সর্বশেষ ১৬ এপ্রিল তার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে আমরা ‘পতিত ফ্যাসিবাদী দল ও তাদের সরকারের সঙ্গে যুক্তদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দেশের রাজনীতি জঞ্জালমুক্ত করার’ দাবি জানিয়েছি,” যোগ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি বহুবার দাবি করেছে যে আইনি প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব এবং তা উচিত। তিনি উল্লেখ করেন, পূর্ববর্তী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিষিদ্ধকরণের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি প্রশাসনিক আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল।
“দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ভোটাধিকারবঞ্চিত জনগণ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য গুম, খুন, জেল, জুলুম সহ্য করেও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দাবি এখনো পূর্ণ হয়নি,” বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি উপেক্ষিত হওয়ার ফলে জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে। এ বিষয়ে সচেতন থাকার জন্য তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
Leave a Reply