1. admin@arshinagartv.com : admin :
  2. sobujhossain.asiantv@gmail.com : admin01 admin01 : admin01 admin01
  3. abclimited2020@gmail.com : hr@admin :
  4. kmsobuj.myreportjtv@gmail.com : kmsobuj.myreportjtv@gmail.com kmsobuj.myreportjtv@gmail.com : kmsobuj.myreportjtv@gmail.com kmsobuj.myreportjtv@gmail.com
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন

তাহলে কি এবার যমুনায় ঢেউয়ের ধাক্কায় ডুবে গেল নৌকা

ডেস্ক রিপোর্ট
  • Update Time : সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
  • ১৮ Time View

দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক ঘুরে আবারও সামনে এসেছে সেই প্রশ্ন—“আওয়ামী লীগ কি এবার তাদের নিজের তৈরি আইনের ফাঁদেই আটকে গেলো?”

১৯৭৪ সাল। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের হাল ধরেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যেই পাস হয় বিশেষ ক্ষমতা আইন, যার ১৯ ধারার একটি উপধারায় সরকারকে অনুমতি দেওয়া হয় জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে এমন কোনো সংগঠনের তৎপরতা স্থগিত করার। উপধারাটিতে আরও বলা হয়, সংশ্লিষ্ট দলের কার্যক্রম স্থগিত থাকাকালীন কেউ তাদের সহায়তা করতে পারবে না।

সময় গড়ায়। ইতিহাস ঘুরে দাঁড়ায় ২০০৯ সালে। নেতৃত্বে এবার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। ক্ষমতায় এসেই তার সরকার প্রণয়ন করে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয় কোনো দল বা সংগঠন সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তাদের নিষিদ্ধ করা যাবে।

এর বাইরেও রয়েছে ১৯৭৮ সালের রাজনৈতিক দল (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, যেখানে বলা হয়েছে — বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা কিংবা নিরাপত্তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এমন মতাদর্শ বা কার্যকলাপ নিয়ে গঠিত রাজনৈতিক দল বেআইনি। এ অধ্যাদেশে গোপন সংগঠন বা সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী রাখাও নিষিদ্ধ।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে আওয়ামী লীগ সরকারই প্রথম সব ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে, যার মধ্যে ছিল জামায়াতে ইসলামীর মতো দলগুলোও।
১৯৭৬ সালে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে দেন রাষ্ট্রপতি সায়েম, আর ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের আমলে জামায়াত ফিরে আসে সক্রিয় রাজনীতিতে।
২০১৩ সালে, আবারও ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে, উল্লেখ করে দলটির গঠনতন্ত্র বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
২০২৪ সালের আন্দোলনের সময় সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগে জামায়াতকে আবার নিষিদ্ধ করে সরকার, যদিও পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির-এর ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করা হয়।

বাম চরমপন্থী সংগঠনগুলোর ক্ষেত্রেও দেখা গেছে একই রকম প্রক্রিয়া— ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টি ও পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয় সশস্ত্র বিদ্রোহ ও সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে।

সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্তটি আসে ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর, যখন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতার কারণে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮১ ধারায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

এছাড়া ২০০৫ সালের সমন্বিত বোমা হামলার ঘটনায় নিষিদ্ধ হয় জঙ্গিগোষ্ঠী জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (JMB) এবং ২০০৯ সালে সেনাবাহিনীতে বিদ্রোহ ও খেলাফত প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় নিষিদ্ধ হয় হিজবুত তাহরির।

২০২4 সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে সহিংস দমন অভিযানের অভিযোগে, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলমান থাকা পর্যন্ত সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দলটি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর সহিংসতা, নিপীড়ন, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপরাধে জড়িত থাকার যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ সরকারের হাতে রয়েছে।

এখন দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে আলোচিত হচ্ছে একটি প্রশ্ন—
“আওয়ামী লীগ কি নিজের প্রণীত আইন দিয়েই নিজেকে নিষিদ্ধ করলো?”
বিশেষ ক্ষমতা আইন হোক কিংবা সন্ত্রাসবিরোধী আইন—সবই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সময়কার সরকার দ্বারা প্রণীত।
এবং সেই আইনই আজ দলের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে।

অতীতে নিষিদ্ধ হওয়া বহু রাজনৈতিক সংগঠন পুনরায় সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরেছে। তবে আওয়ামী লীগের মতো প্রতিষ্ঠিত এবং দীর্ঘ সময় শাসন করা একটি দলকে আইনত নিষিদ্ধ করা, নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © arshinagar tv 2025
Design & Develop BY Coder Boss