চার দিনের রক্তক্ষয়ী গোলাগুলির পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ফিরে এসেছে এক ধরনের টানটান শান্তি। আন্তর্জাতিকভাবে মধ্যস্থতাকৃত এক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যার মধ্যে অনেক বেসামরিকও রয়েছেন।
জাতিসংঘের সমর্থনে ৩০টিরও বেশি দেশের কূটনৈতিক উদ্যোগে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। বাংলাদেশ, কাতার, তুরস্ক ও যুক্তরাজ্যসহ বহু দেশ এ যুদ্ধবিরতির প্রশংসা করেছে এবং উভয় পক্ষকে সংযম ও আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল ভারতের পাহালগামে ২৬ হিন্দু তীর্থযাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনার জবাবে দিল্লি পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে কথিত “জঙ্গি অবকাঠামো”তে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকেই দায়ী করেছে, যদিও ইসলামাবাদ এর সম্পৃক্ততা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিস্রি জানান, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনায় কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। “বারবার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে শক্ত হাতে মোকাবেলা করতে বলা হয়েছে আমাদের বাহিনীকে,” বলেন মিস্রি।
অন্যদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, তারা এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে সম্মান করে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যদিও সাময়িকভাবে গোলাগুলি বন্ধ হয়েছে, তবুও পরিস্থিতি এখনও অত্যন্ত নাজুক। পাহালগাম হামলার পর দ্রুত যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, তা স্পষ্ট করে দেয় যে, সীমান্তবর্তী অঞ্চলে শান্তি কতটা দুর্বল এবং জঙ্গিবাদ ও রাষ্ট্রীয় উত্তেজনা কতটা গভীর শিকড় গেড়েছে।
এই যুদ্ধবিরতি দীর্ঘমেয়াদী শান্তির জন্য একটি ‘সুবর্ণ সুযোগ’ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে এটি স্থায়ী শান্তিতে রূপ নেবে কি না, তা নির্ভর করছে দিল্লি ও ইসলামাবাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং আন্তর্জাতিক চাপ কতটা কার্যকর হয় তার ওপর।
Leave a Reply