ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নীমতলা এলাকায় হৃদয়বিদারক এক সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চার সদস্যসহ মোট পাঁচজন নিহত হয়েছেন। দ্রুতগতির একটি যাত্রীবাহী বাস থেমে থাকা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সে সজোরে ধাক্কা দিলে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—মাদারীপুর সদর উপজেলার মিঠাপুকুর গ্রামের আব্দুস সামাদ ফকির, তার ছেলে বিল্লাহ ফকির, মেয়ে আফসানা, এবং অ্যাম্বুলেন্স চালক। নিহত অপরজনের নাম এখনও শনাক্ত করা যায়নি।
দুর্ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে। পরিবারটি গর্ভবতী রোজিনা বেগমকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিল। ২৩ মে তার সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারিত ছিল। গতরাত থেকেই শুরু হওয়া ব্যথার কারণে সকালে অ্যাম্বুলেন্সে রওনা হন তারা।
তবে নীমতলায় পৌঁছালে দুর্ঘটনার শুরু। চলন্ত অবস্থায় হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্সের একটি চাকা ব্লাস্ট করে। চালক সেটি রাস্তার ডান পাশে সরিয়ে নিয়ে চাকা মেরামতের কাজ করছিলেন। ভেতরে এবং আশপাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন পরিবারের সদস্যরা।
এ সময় কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি দ্রুতগতির বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সরাসরি পেছন থেকে ধাক্কা দেয় থেমে থাকা অ্যাম্বুলেন্সে। ঘটনার তীব্রতা এতটাই ছিল যে ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় বাকিদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানেই আরও চারজনের মৃত্যু হয়।
বাসটির হেলপার সাইফুল ইসলাম শান্ত জানান, চালক ফয়সাল (৪০) ব্রেক কষলেও সময়মতো থামাতে পারেননি। ফলে ভয়াবহ সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে।
হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে ঢামেকে পাঠানো হয়। বাকিদের মৃত্যুর খবর এখনও নিশ্চিত করা হয়নি, তবে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। নিহত এক নারীর মরদেহ পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও অ্যাম্বুলেন্স জব্দ করা হয়েছে।
এ দুর্ঘটনা আবারও সামনে এনেছে দেশের দ্রুতগতির এক্সপ্রেসওয়েগুলোতে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপদ দাঁড়ানোর জায়গা নির্ধারণ সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের অপ্রস্তুত অবস্থাকে।
Leave a Reply