দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায়। বুধবার (৭ মে) ভোররাতে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ, কোটলি ও ভাওয়ালপুরে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশু রয়েছে। পাল্টা জবাবে পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে এবং নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর একটি ভারতীয় ব্রিগেড সদর দফতর ধ্বংস করেছে।
ভারতের সশস্ত্র বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামের এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের মাটিতে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ঘাঁটি ও অবকাঠামো। তাদের দাবি, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী নয়, বরং জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে এই হামলা চালানো হয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের সরকারি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে, “ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে।”
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া: ‘কাপুরুষোচিত হামলা’ ও জবাবের হুমকি
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (ISPR) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানিয়েছেন, ভারতীয় হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “ভারতীয় জঙ্গি বিমান পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে পারেনি। বরং আকাশ থেকেই হামলা চালানো হয়েছে, যার ফলে বেশ কয়েকটি জেট ভূপাতিত হয়েছে।”
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “যথাসময়ে জবাব দেওয়া হবে। আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।”
নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সংঘর্ষ: ব্রিগেড সদর দফতর ধ্বংসের দাবি
নিরাপত্তা সূত্রে পাওয়া খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রতিশোধমূলক হামলায় ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুধনিয়াল সেক্টরে একটি শত্রুপক্ষের পোস্ট ও একটি ব্রিগেড সদর দফতর ধ্বংস করে দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: উদ্বেগে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘঘটনার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন,
“এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা মাত্রই এই বিষয়ে জেনেছি। এটি বহু দশকের শত্রুতা থেকে উদ্ভূত। আশা করি দ্রুত এ পরিস্থিতির অবসান ঘটবে।”
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিষয়টিকে “গভীর উদ্বেগজনক” বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন,
“এই অঞ্চলের সংঘাত বিশ্ব আর বহন করতে পারবে না। শান্তিপূর্ণ সমাধানই একমাত্র পথ।”
Leave a Reply