গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের পূর্ণাঙ্গ অবরোধের ফলে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক পরিসরে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই পরিস্থিতিকে “বাধ্যতামূলক অনাহার” হিসেবে আখ্যায়িত করছে।
খাবার, পানি ও ওষুধবাহী শত শত ট্রাক সীমান্তে আটকে রয়েছে, প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছে না। গাজার গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, অবরোধের কারণে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৭ জন ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা গেছেন, যাদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।
গাজার চিকিৎসা ও সিভিল ডিফেন্স সূত্র জানায়, শনিবার ভোর থেকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও অন্তত ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন শিশু।
অবরোধের কারণে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো অবিলম্বে গাজায় মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫২,৪৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১,১৮,৩৬৬ জন। তবে গাজার গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিস বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে হাজার হাজার মানুষ চাপা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যার ফলে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা ৬১,৭০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে চালানো হামলায় আনুমানিক ১,১৩৯ জন ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২০০ জনেরও বেশি ব্যক্তি জিম্মি হন।
সাহায্য আটকে থাকা, আহতদের চিকিৎসা না পাওয়া এবং সাধারণ মানুষ অনাহারে মৃত্যুবরণ—সব মিলিয়ে গাজা আর কেবল যুদ্ধের কেন্দ্র নয়, এটি এখন বিশ্ববাসীর চোখের সামনে এক ভয়াবহ মানবিক ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে।
Leave a Reply