বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সামনে ইতিহাস গড়ার হাতছানি ছিল। ২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই করা যুব ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ (৩৪০) ছোঁয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল দলটি। তবে মাত্র ৪ রানের ব্যবধানে সেই রেকর্ড হাতছাড়া হয়। তা সত্ত্বেও মাঠে আধিপত্য ছিল একচেটিয়াভাবে বাংলাদেশের।
শনিবার, শ্রীলঙ্কার মাটিতে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে জাওয়াদ আবরারের ঝলমলে সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশ যুব দল ১৪৬ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে। এই জয়ে ৬ ম্যাচের সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে আজিজুল হাকিমের নেতৃত্বাধীন দল। সিরিজ নিশ্চিত করতে এখন কেবল একটি জয় প্রয়োজন।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রানের ঝড় তোলেন ওপেনার জাওয়াদ আবরার। তাঁর ব্যাটিং ছিল এক কথায় আগ্রাসী এবং আত্মবিশ্বাসী। মাত্র ১০৬ বলে ১১৩ রানের ইনিংসে ছিল ১৪টি চার ও ১৩টি ছক্কা—সত্যিকারের আধুনিক ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রতিচ্ছবি। এই সেঞ্চুরিটি চলমান সিরিজে তাঁর দ্বিতীয়, যা তরুণ ব্যাটার হিসেবে তাঁর ধারাবাহিকতা ও পরিপক্বতা স্পষ্ট করে।
মিডল অর্ডারে রিজান হাসান যোগ করেন কার্যকরী ৭৭ বলে ৮২ রান, আর ইনিংসের শেষ দিকে সামিউন বশির ও আল ফাহাদের ঝড়ো ইনিংসে (৮ বলে ২৩ এবং ৫ বলে ১৯ রান) দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ৩৩৬ রান।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ৬ রানের মধ্যে দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পর ধস নামে টপ অর্ডারে। পুরো ইনিংস জুড়েই ব্যাটাররা ছিলেন বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত আক্রমণের নিচে।
লঙ্কান অধিনায়ক বিমথ দিনসারা একমাত্র হাল ধরে রাখার চেষ্টা করেন একটি ফিফটি দিয়ে, কিন্তু তা দলের পরাজয় ঠেকাতে যথেষ্ট ছিল না। শ্রীলঙ্কা থেমে যায় মাত্র ১৯০ রানে, ৩৮.৪ ওভারে।
বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট ছিল সমন্বিত ও নিয়ন্ত্রিত। পেসার আল ফাহাদ নেন ৩ উইকেট মাত্র ৪১ রানে, পাশাপাশি বাঁহাতি স্পিনার সানজিদ ও অধিনায়ক আজিজুল তুলে নেন ২টি করে উইকেট।
এই জয় শুধু সিরিজে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াই নয়, বরং যুব পর্যায়ে দলের গভীরতা ও সম্ভাবনার স্পষ্ট প্রতিচ্ছবিও। সিরিজের বাকি দুই ম্যাচে জয় ও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে, এটি হয়ে উঠতে পারে ভবিষ্যতের জন্য আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার বড় ভিত্তি।
Leave a Reply