বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে নব্বই দশকের যে ক’জন শিল্পী জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছিলেন, তাদের অন্যতম ছিলেন মৌসুমী। অসংখ্য সুপারহিট সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি নিজস্ব মাধুর্য ও সৌন্দর্যে তিনি হয়ে উঠেছিলেন সময়ের পোস্টার-প্রিয় অভিনেত্রী। তবে সাম্প্রতিক খবর ইঙ্গিত দিচ্ছে, মৌসুমী হয়তো তার অভিনয় অধ্যায় শেষ করতে চলেছেন—এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন তার জীবনসঙ্গী ও অভিনেতা ওমর সানী।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে অবস্থান করছেন মৌসুমী। সেখানেই বসবাস করছেন তার মায়ের সঙ্গে; আছেন কন্যা ফাইজাও। খুব শিগগির তার দেশে ফেরার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন ওমর সানী।
“ভুলে যেতে চাই আমি মৌসুমী ছিলাম”—এক নিঃশব্দ বিদায়?
গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওমর সানী বলেন,
“মৌসুমী এখনই ফিরছেন না। মেয়ের পড়াশোনা, শাশুড়ির অসুস্থতা—সব মিলিয়ে এখন তার জন্য পরিবারই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য এসেছে তার একটি ব্যক্তিগত মন্তব্যে। মৌসুমী বলেছেন,
“ভুলে যেতে চাই আমি মৌসুমী ছিলাম!”
এই কথাটিকে ‘অভিনয় থেকে একরকম বিদায়’ বলেই বিবেচনা করছেন অনেকেই।
লিজেন্ডের প্রতি অবহেলা ও নতুনদের সৌজন্য সংকট
ওমর সানীর ভাষায়,
“এই কথাটা খুব কষ্টের। মৌসুমীর মতো একজন কিংবদন্তিকে ঘিরে ভালো কাজ কেউ ভাবেন না—এটাই সবচেয়ে বেদনাদায়ক।”
তিনি আরও জানান, এখনকার অনেক নতুন শিল্পীর মধ্যেই যথাযথ সম্মানবোধের অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
“অনেকেই এখন মনে করেন, তারা নাকি মৌসুমীর চেয়েও বড় তারকা হয়ে গেছেন,”—বলেন সানী।
একটি কিংবদন্তির শুরু ও উত্তরাধিকার
মাত্র ২০ বছর বয়সে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে মৌসুমীর। প্রথম নায়ক ছিলেন তৎকালীন সময়ের আরেক কিংবদন্তি, সালমান শাহ।
এই জুটি উপহার দিয়েছিল একাধিক জনপ্রিয় সিনেমা। পরে পৃথকভাবে কাজ করে দুজনেই নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করেন।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মৌসুমী শুধু জনপ্রিয় নন, পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সহ বহু সম্মাননা। একজন নারী অভিনেত্রী হিসেবে তিনি যুগের পর যুগ দর্শকের হৃদয়ে ছিলেন স্থায়ী আসনে।
Leave a Reply