1. admin@arshinagartv.com : admin :
  2. sobujhossain.asiantv@gmail.com : admin01 admin01 : admin01 admin01
  3. abclimited2020@gmail.com : hr@admin :
  4. kmsobuj.myreportjtv@gmail.com : kmsobuj.myreportjtv@gmail.com kmsobuj.myreportjtv@gmail.com : kmsobuj.myreportjtv@gmail.com kmsobuj.myreportjtv@gmail.com
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন

খুলনায় কর্মহীন পাটশ্রমিকদের কর্মস্থান বন্ধ হলেও টিকে আছে স্বপ্ন

ডেস্ক রিপোর্ট
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫
  • ৪১ Time View

এক সময়ের গর্বিত শিল্পনগরী খুলনার খালিশপুর এখন অনেকটাই স্মৃতির শহর। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন হাজারো শ্রমিক। কারখানার বাঁশির শব্দ আর কর্মচাঞ্চল্যের সেই দিন পেরিয়ে এখন শুধুই টিকে থাকার সংগ্রাম।

৪৫ বছর বয়সী আবুল হাওলাদার ছিলেন খালিশপুর জুট মিলের একজন অভিজ্ঞ শ্রমিক। সেখানে ১৬ বছর কাজ করেছেন। অথচ ২০২০ সালে সরকারের সিদ্ধান্তে একযোগে বন্ধ হয়ে যায় ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল। এরপর থেকেই জীবনে নেমে আসে অস্থিরতা। এখন সপ্তাহে মাত্র দুই-তিন দিন কাজ পেলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন তিনি।

আবুল বলেন, “একসময় কাজ ছিল, সম্মান ছিল, ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেত। এখন কাজের জন্য সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকলেও কোনো নিশ্চয়তা নেই। যেন জীবনটা থেমে গেছে।”

খুলনা অঞ্চলের প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক এই একই বাস্তবতার মুখোমুখি। কেউ হয়েছেন রিকশাচালক, কেউ দিনমজুর, আবার কেউবা গৃহকর্মে নিযুক্ত। কিন্তু সেই জীবনযাত্রা যেন কেবল বেঁচে থাকার নামান্তর।

প্লাটিনাম জুট মিলের সাবেক শ্রমিক রফিকুল ইসলাম এখন গাড়ির হেলপার হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, “তিন বেলা খাবার জুটত, বাচ্চারা স্কুলে যেত। এখন সব কিছু থেমে গেছে। সরকার যদি একটু পাশে দাঁড়াত!”

নারী শ্রমিক রাশিদা খাতুন বলেন, 

মেয়ের মুখ চেয়ে কাজ করতাম। এখন বাসাবাড়ির ঝিয়ের কাজ করি, সংসার চলে না। মেয়ে বড় হয়েছে, বিয়ের বয়স হয়েছে—কিন্তু সামর্থ্য নেই। সরকার যদি মিল চালু করত, হয়তো নতুন করে বাঁচার সুযোগ পেতাম।

বর্তমানে বন্ধ হওয়া ৯টি পাটকলের মধ্যে চারটি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় আংশিকভাবে চালু হয়েছে—দৌলতপুর, জেজেআই, স্টার ও কার্পেটিং জুট মিল। কিন্তু এসব মিল চলছে পূর্ণ সক্ষমতার এক-চতুর্থাংশে, আর কাজ পেয়েছেন সর্বোচ্চ ২ হাজার শ্রমিক।

বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) জানিয়েছে, মিলগুলো ধাপে ধাপে ইজারা ভিত্তিতে বেসরকারি খাতে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। খুলনা অঞ্চলের বিজেএমসি সমন্বয় কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানি বলেন,

আমরা আশাবাদী, পর্যায়ক্রমে সব মিল চালু হবে এবং নতুন করে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান হবে।

তবে শ্রমিক নেতাদের মতে, প্রতিশ্রুতি অনেকবার শোনা গেছে, বাস্তবতা এখনও বদলায়নি। যুগ্ম আহ্বায়ক মো. খলিলুর রহমান বলেন, “হাজারো শ্রমিক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে, শিশুদের পড়াশোনা বন্ধ, চিকিৎসার অভাব—সব মিলিয়ে চরম দুর্দশা।”

শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত নয়, গত এক দশকে খুলনায় আরও অন্তত পাঁচটি বেসরকারি পাটকলও বন্ধ হয়ে গেছে। সেইসঙ্গে হারিয়ে গেছে নিউজপ্রিন্ট মিল, হার্ডবোর্ড ফ্যাক্টরি, দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির মতো একসময়ের গর্বিত প্রতিষ্ঠানগুলো। খুলনার অর্থনীতি আজ গভীর সংকটে।

তবুও, শ্রমিকদের চোখে এখনও একরাশ প্রত্যাশা। তারা চান সরকার উদ্যোগ নেবে, মিলগুলো আবার চালু হবে, আর এই শিল্পাঞ্চলে ফিরবে কর্মমুখর সকাল। প্রতিদিন মিলগেটের সামনে দাঁড়িয়ে তারা খুঁজে ফেরেন সেই হারিয়ে যাওয়া দিনের আলো।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © arshinagar tv 2025
Design & Develop BY Coder Boss