স্পেন, পর্তুগাল এবং ফ্রান্সের কিছু অংশ সোমবার (২৮ এপ্রিল) ব্যাপক বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কবলে পড়ে, যার ফলে কোটি কোটি মানুষ দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় চরম ভোগান্তির সম্মুখীন হন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এটি সাম্প্রতিক ইউরোপের ইতিহাসে অন্যতম বড় বিদ্যুৎ বিভ্রাট।
স্পেনের জাতীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা রেড এলেক্ট্রিকা জানিয়েছে, দুপুরের দিকে আকস্মিকভাবে বিদ্যুৎ চাহিদা ২৭,৫০০ মেগাওয়াট থেকে ১৫,০০০ মেগাওয়াটে নেমে আসে। এতে মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, লিসবন এবং পোর্তোসহ বিভিন্ন শহরে মেট্রো চলাচল থেমে যায়, বিমানবন্দরে ফ্লাইট স্থগিত হয়, মোবাইল নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়ে এবং ট্রাফিক সিগন্যাল অচল হয়ে যায়।
ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চল, বিশেষ করে আন্দোরা সীমান্তবর্তী এলাকা, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কবলে পড়ে। অ্যান্ডোরা এবং ফ্রান্সের সীমান্তবর্তী কয়েকটি অঞ্চলেও স্থানীয়রা দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ছিলেন। বারাজাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে বলে বিমান কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সঠিক কারণ এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে, কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে ইউরোপের আন্তঃসংযুক্ত বিদ্যুৎ গ্রিডের কোনো কারিগরি ত্রুটি বা সাইবার হামলার সম্ভাবনার বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য স্পেন, পর্তুগাল এবং ফ্রান্সের জাতীয় গ্রিড কর্তৃপক্ষ একযোগে কাজ করছে।
এদিকে, জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় হাসপাতালগুলো ব্যাকআপ জেনারেটর ব্যবহার করছে এবং নাগরিকদের বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউরোপজুড়ে বিদ্যুৎ গ্রিড আরও শক্তিশালী ও নিরাপদ করার প্রয়োজনীয়তা এ ঘটনাই আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
এ ঘটনার ফলে প্রায় ৫ কোটি মানুষ সাময়িকভাবে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েন, যা সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের জন্য বড় ধরনের সতর্কবার্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Leave a Reply