জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ধর্ষকদের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছেন। সম্প্রতি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করা কলেজছাত্রী লামিয়ার মৃত্যুকে হৃদয়বিদারক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “এত সুশীলতা দেখিয়ে লাভ নেই, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে গণমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে সারজিস আলম বলেন,
যে ভাই আমাদের নতুন বাংলাদেশের জন্য জীবন দিয়েছেন, তার মেয়ের সঙ্গে এমন নির্মম ঘটনা ঘটেছে, যা গোটা জাতিকে শোকাহত করেছে। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা কোনো নারীর সঙ্গেই প্রত্যাশিত নয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে এসিড নিক্ষেপের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার পর যেভাবে এ অপরাধ কমে এসেছে, ধর্ষণের ক্ষেত্রেও তেমনি কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং ভবিষ্যতের দায়িত্বশীলদের প্রতি ধর্ষকদের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি জানান।
সারজিস আলম উল্লেখ করেন, “
একটা সময় এসিড হামলার ঘটনা ছিল ভয়াবহ। কিন্তু কঠোর শাস্তির কারণে তা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ ধর্ষণের মতো অপরাধের ক্ষেত্রেও একই ধরনের কড়া পদক্ষেপ জরুরি।
এদিকে, লামিয়ার মৃত্যু দেশজুড়ে শোকের ছায়া ফেলেছে। ১৭ বছর বয়সী কলেজছাত্রী লামিয়া, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক জুলাই আন্দোলনের শহীদ জসিম উদ্দিনের মেয়ে, শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে আত্মহত্যা করেন। মা রুমা বেগমের অনুপস্থিতিতে তিনি নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নে বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন লামিয়া। পরে তিনি নিজেই মামলার বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। দুমকি থানা পুলিশ অভিযুক্ত সাকিব ও সিফাতকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। তবে মামলার পর আসামিদের পক্ষ থেকে হুমকি পাওয়ার অভিযোগও করেছে লামিয়ার পরিবার।
পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্ত শেষে লামিয়ার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হবে। তার মৃত্যুতে সামাজিক চাপ ও নিরাপত্তাহীনতার চিত্র আরও একবার সামনে এসেছে, যা নারী অধিকার নিয়ে নতুন করে ভাবনার দরকারীয়তা তৈরি করেছে।
Leave a Reply