দেশে বৃষ্টির পরের প্রচণ্ড গরম এডিস মশার বিস্তারের আদর্শ পরিবেশ তৈরি করছে। মাত্র সাতদিনের মধ্যে ডিম থেকে পূর্ণবয়স্ক মশায় পরিণত হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, অল্প সময়ের মধ্যেই ডেঙ্গুর পিক সিজন শুরু হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পিক সিজন আসার আগে থেকেই মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন। তবে বাস্তবতা হলো, এখন ব্যবহৃত ফগিং পদ্ধতি কার্যকর ভূমিকা রাখছে না।
রাজধানীর আগারগাঁও কলোনিতে সরেজমিনে দেখা গেছে, ড্রেনে জমে থাকা পানিতে বিভিন্ন প্রজাতির মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে। দিনের বেলা পর্যন্ত মশার আক্রমণে স্থানীয়রা মশারির নিচে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, নিয়মিত ওষুধ ছিটানোর কথা থাকলেও তা দীর্ঘদিন ধরে করা হচ্ছে না। সিটি করপোরেশনের ফগিং কার্যক্রমও অকার্যকর বলেই মনে করছেন এলাকাবাসী।
কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বলেন, “বর্তমান ফগিং পদ্ধতিতে মশা নিধন হচ্ছে না। এখনই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পানির জমাট প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।” তিনি সিটি করপোরেশনকে আগেভাগেই পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
এদিকে, আগারগাঁওয়ের এই কলোনিতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার অব্যবস্থাপনার কারণে সারাবছরই ডেঙ্গু ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগের প্রকোপ লেগে থাকে।
গত বছর এই সময় থেকেই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছিল। দুই সিটি করপোরেশন প্রতিবছরই ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুতির কথা জানালেও বাস্তবে কার্যকরী উদ্যোগের ঘাটতি থেকেই যায়। এবছরও মৌসুম শুরু হলেও মাঠপর্যায়ে মশক নিধনের তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।
ডিএসসিসি’র প্রশাসক শাহজাহান মিয়া জানান, “মশা নিধনের ওষুধ সংক্রান্ত নানা অনিয়মের ইতিহাস রয়েছে। এবার ওষুধ ক্রয় সম্পন্ন হয়েছে, তবে ছিটানো ও তদারকি এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিকার নয়, প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই হবে। বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা এবং জমে থাকা পানি সরানোর মাধ্যমে ব্যক্তিগত সচেতনতার পাশাপাশি প্রশাসনিক কার্যক্রমও জরুরি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যু হয় ৫৭৫ জনের, যাদের মধ্যে নারীদের সংখ্যা ছিল তুলনামূলক বেশি।
Leave a Reply