কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারানো ২৬ জনের মধ্যে একজন ছিলেন ভারত ভূষণ (৩৫)। গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগে তিনি অস্ত্রধারীদের কাছে একবারও নিজের জীবনের জন্য নয়—আকুতি জানিয়েছিলেন তার ৩ বছরের সন্তানের জন্য। তবে সেই অনুনয়ও থামাতে পারেনি বর্বরতা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম NDTV জানিয়েছে, হামলার সময় ভূষণের স্ত্রী ড. সুজাতা ভূষণ ও তাদের সন্তান তার সাথেই ছিলেন। ১৮ এপ্রিল থেকে পরিবারটি ছুটি কাটাতে কাশ্মীরে যান। হামলার দিন ২২ এপ্রিল ছিল তাদের শেষ গন্তব্য পহেলগাম।
ড. সুজাতা বলেন, “সেদিন আমরা পনি রাইডে উঠেছিলাম। ছবি তুলছিলাম, সন্তানটির সঙ্গে খেলছিলাম। কাশ্মীরি পোশাক পরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, হঠাৎ করেই চারপাশ কেঁপে ওঠে গুলির শব্দে।”
দুপুর আড়াইটার পরপরই আক্রমণ শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, প্রথম গুলির পরই তৃণভূমির মাঝে ঢুকে পড়ে হামলাকারীরা এবং নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে। ভূষণ পরিবারসহ অনেক পর্যটক ও স্থানীয় মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের চেষ্টা করলেও খোলা মাঠে অনেকেই আটকে পড়েন।
একজন বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী জানান, “প্রথমে মনে হয়েছিল, ওরা পাখি বা বন্যপ্রাণী তাড়াচ্ছে। কিন্তু শব্দ বাড়তেই বুঝতে পারি, এটা কিছু ভয়ানক… পালানোর কোনো পথও ছিল না।”
এদিকে, এই ধরনের সুনির্দিষ্ট ও ভয়ঙ্কর হামলার পেছনে কয়েক বছরের সামরিক প্রশিক্ষণ থাকতেই পারে বলে NDTV-কে জানান এক প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক।
এই মর্মান্তিক হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া, আর ভারত ভূষণের শেষ আকুতি আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছে—সহিংসতার ভেতরেও মানবতার করুণ চিত্র।
Leave a Reply