ঢাকা শহরে বাসাবাড়ির পানি ব্যবহারের উপযোগিতা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে। রাজধানীর খিলগাঁও, মুগদা, মগবাজার, কল্যাণপুর, বনশ্রী, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ীসহ একাধিক এলাকায় ওয়াসার সরবরাহকৃত পানিতে পাওয়া যাচ্ছে ছোট ছোট পোকা ও নানা ধরনের ময়লা। কোথাও পোকাগুলোর রঙ লালচে, কোথাও আবার কালো। পানি থেকে আসছে তীব্র দুর্গন্ধ—ফলে খাবার তো দূরের কথা, দৈনন্দিন ব্যবহারেও বিপাকে পড়ছেন নগরবাসী।
স্থানীয়রা বলছেন, এই পানি রান্না, গোসল এমনকি ধোয়ামোছার কাজেও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বহু বাসিন্দা অভিযোগ জানিয়েছেন ওয়াসা কর্তৃপক্ষের কাছে, কিন্তু কার্যকর কোনো প্রতিকার মিলছে না। অনেকের অভিযোগ, পানি ফিল্টার করেও পোকা রোধ করা যাচ্ছে না।
খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, “বছরের এই সময়টায় পানির সঙ্গে পোকা আসা যেন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। ছাঁকনি দিয়েও পুরোপুরি মুক্তি মেলে না।” অন্যদিকে মগবাজারের এক ভুক্তভোগী জানান, “পানিতে লালচে কেচোর মতো পোকা দেখা যাচ্ছে। দুর্গন্ধ এমন যে, ব্যবহারের সময়ও অস্বস্তি হয়।”
ওয়াসার পক্ষ থেকে দুর্গন্ধের বিষয়টি স্বীকার করা হলেও, পোকা-ময়লার দায় নিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ। ঢাকা ওয়াসার ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম শহীদ উদ্দিন দাবি করেছেন, পানি ছাড়ার আগে নিয়মিত পরীক্ষা করা হয়, এবং এখন পর্যন্ত পানিতে পোকার উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। তার মতে, বাসার সংরক্ষণাগার ও ছাদের ট্যাংকের অপরিচ্ছন্নতাই এই সমস্যার মূল কারণ।
তবে ভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছেন বহু বাড়িওয়ালা। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাংক পরিষ্কার করলেও সমস্যা থেকে রেহাই মিলছে না। একজন বাড়ির মালিক বলেন, “আগে ভেবেছিলাম ট্যাংক অপরিষ্কার বলেই সমস্যা, কিন্তু নিয়মিত পরিষ্কার করেও পানিতে পোকা পাওয়া যাচ্ছে।”
এই অবস্থায় নাগরিকদের দাবি—দায়সারা বক্তব্য নয়, চাই স্থায়ী ও কার্যকর সমাধান। পানির মান নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
Leave a Reply