বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন এখন সময়ের দাবি—এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তদন্ত কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, “এ হত্যাকাণ্ড ছিল সুপরিকল্পিত এবং নিষ্ঠুর। এর পেছনের সব রহস্য খুঁজে বের করতেই হবে।”
তদন্ত কমিশনের সদস্যরা বৈঠকে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। উত্তরে তিনি বলেন, “পুরো জাতি আজ কমিশনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা সবাই এই প্রশ্নের উত্তর চাই—এ হত্যাযজ্ঞের পেছনে কারা ছিল, কীভাবে এটি সংঘটিত হলো। কমিশনকে সফল হতেই হবে।”
তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
তদন্ত কমিশনের প্রধান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আলম ফজলুর রহমান জানান, তদন্ত দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে এবং আগামী জুনের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের লক্ষ্যে কাজ চলছে। তবে, যেহেতু ঘটনা প্রায় ১৬ বছর আগের, তাই কিছু তথ্য ও সাক্ষ্য সংগ্রহে বিলম্ব হচ্ছে। অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকে বিদেশে অবস্থান করছেন, যাদের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, বিদেশে অবস্থানরত এমন ২৩ জনের মধ্যে ৮ জন সাক্ষাৎকার দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কারাগারে আটক কিছু ব্যক্তির সঙ্গেও সাক্ষাৎকার নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
তদন্তের ধরণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “আমরা হত্যাকাণ্ডের ধরন বিশ্লেষণ করছি। স্পষ্ট যে, এটি ছিল একটি সুপরিকল্পিত অপারেশন। ডিজিকে হত্যার পর পরিকল্পিতভাবে অন্য কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়েছে। এমন ঘটনা কেবলমাত্র ষড়যন্ত্রের মাধ্যমেই ঘটতে পারে। এটি যেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি।”
কমিশনের সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার অভিযোগ করে বলেন, “এত বড় হত্যাকাণ্ডের পরেও আজ পর্যন্ত একজন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকেও দায়িত্ব থেকে সরানো হয়নি। গোয়েন্দা সংস্থা, সামরিক বাহিনী এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব—সবারই এখানে বড় ধরনের ব্যর্থতা রয়েছে।”
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের অন্যান্য সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান, মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, ড. এম আকবর আলী, মো. শরীফুল ইসলাম, শাহনেওয়াজ খান চন্দন ও এ টি কে এম ইকবাল।
Leave a Reply