গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করার যেকোনো পরিকল্পনার বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান জানান, এই ধরনের পদক্ষেপ মানবিক মূল্যবোধ ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।
স্থানীয় সময় ১১ এপ্রিল, তুরস্কের আন্তালিয়াতে আয়োজিত ‘গাজা যুদ্ধ বন্ধে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে’ সৌদি আরবের পক্ষ থেকে এই অবস্থান স্পষ্ট করা হয়।
বৈঠকে ফয়সাল বলেন,
“আমরা কোনো অজুহাত বা নীতিগত মোড়কে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির চেষ্টাকে ঘোরতরভাবে প্রত্যাখ্যান করি।”
তিনি ‘স্বেচ্ছা অভিবাসন’ শব্দটি ব্যবহার করে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতিকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা প্রসঙ্গে বলেন, “এ ধরনের শব্দচয়ন বাস্তবতাকে আড়াল করতে পারে না, এটি একধরনের প্রতারণা।”
যুদ্ধবিরতির আহ্বান এবং মানবিক সহায়তার উপর জোর
গাজায় চলমান সংঘাতের পটভূমিতে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান এবং অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন,
মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজাকে পর্যটন এলাকায় পরিণত করার পরিকল্পনাটি বাস্তুচ্যুতির একটি ভয়ঙ্কর রূপ, যা ফিলিস্তিনিদের মৌলিক অধিকারকে অগ্রাহ্য করে।
গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলি বাহিনী ১৮ মার্চ থেকে আবারো গাজায় হামলা শুরু করে, যা ১৯ জানুয়ারির যুদ্ধবিরতির পরিপন্থী। এর আগেও, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় আগ্রাসন চালায়, যাতে এখন পর্যন্ত ৫০,৮০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন—যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
এই ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ গাজার অবকাঠামোকে প্রায় বসবাসের অযোগ্য করে তুলেছে।
আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগেও একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
Leave a Reply