ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশগ্রহণের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাহমুদ খলিলের বিরুদ্ধে নির্বাসনের মামলা চলতে পারে বলে রায় দিয়েছেন দেশটির অভিবাসন আদালতের বিচারক। লুইসিয়ানার একটি আদালতে প্রায় দুই ঘণ্টার শুনানি শেষে বিচারক জেমি কোমান্স জানান, সরকারের পক্ষ থেকে “স্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ” উপস্থাপন করা হয়েছে যে খলিল নির্বাসনযোগ্য।
শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশগ্রহণ, তবুও শাস্তির মুখে খলিল
মাহমুদ খলিল, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের একজন স্থায়ী বাসিন্দা, শান্তিপূর্ণভাবে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন এবং কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। খলিলের আইনজীবী মার্ক ভ্যান ডার হাউট জানান, এই মামলা তার ন্যায্য বিচার পাওয়ার অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি বলেন, “এই রায় রাজনৈতিক মত দমন ও অভিবাসন আইনের ভয়ংকর অপব্যবহারের প্রতিচ্ছবি। আমরা এখানেই থামছি না।”
রাজনৈতিক চাপের অভিযোগ, রুবিওর চিঠি ঘিরে বিতর্ক
এ মামলাকে ঘিরে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগও উঠেছে। মার্কিন সিনেটর মার্কো রুবিও আদালত ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে লেখা চিঠিতে দাবি করেন, খলিল “ইহুদি-বিরোধী কার্যকলাপে” জড়িত ছিলেন এবং তার উপস্থিতি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি করছে। যদিও চিঠিতে তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি, তবু খলিলের অভিবাসন মর্যাদা বাতিলের আহ্বান জানানো হয়েছে।
খলিলের পক্ষে দাঁড়িয়ে তার সমর্থকরা বলেছেন, তাকে শুধু মতপ্রকাশের কারণে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। শুক্রবার আদালতের বাইরে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রমাণ ছাড়াই মতাদর্শের কারণে একজন স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা বাতিল করার সিদ্ধান্ত মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
খলিলের স্ত্রী নূর আবদাল্লা আদালতের রায়কে “হৃদয়বিদারক” আখ্যা দিয়ে বলেন, “কেউ যদি অন্যায়ের প্রতিবাদ করে, তাকে নিজের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়া ন্যায়ের পরিপন্থী।”
বিচারক খলিলের আইনজীবীদের আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়েছেন রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য। তবে এ সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত নয়। নিউ জার্সির একটি পৃথক মামলায় ফেডারেল বিচারক আপাতত খলিলের নির্বাসন স্থগিত রেখেছেন, কারণ আদালত খতিয়ে দেখছে তার গ্রেপ্তার যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী ভঙ্গ করেছে কি না।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিবাসন কর্তৃপক্ষের নজরদারি ও দমন-পীড়ন নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
Leave a Reply