কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদে আবারও নতুন দানের রেকর্ড গড়েছে। ৪ মাস ১২ দিন পর আজ শনিবার সকালে খোলা হয় মসজিদের ১১টি লোহার দানবাক্স, যেখানে পাওয়া গেছে মোট ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা। এছাড়া মিলেছে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা।
এই বিপুল পরিমাণ দানের অর্থ ২৮টি বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলায় সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় টাকা গণনায় অংশ নেন প্রায় ২৫০ জন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও শিক্ষক এবং ৭০ জন ব্যাংক কর্মকর্তা।
পাগলা মসজিদে প্রতি তিন থেকে চার মাস অন্তর দানবাক্স খোলা হয়। সর্বশেষ গত বছরের ৩০ নভেম্বর খোলার সময় পাওয়া গিয়েছিল ৮ কোটি ২১ লাখ টাকারও বেশি। এবার সেই রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানান, মসজিদের দানের অর্থ দিয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। দানের একটি অংশ দরিদ্র ও অসহায় রোগীদের চিকিৎসায় ব্যয় করা হবে। অবশিষ্ট অর্থ ব্যাংকে নিরাপদে সংরক্ষণ করা হবে।
পাগলা মসজিদকে ঘিরে বহু মানুষের বিশ্বাস—সঠিক নিয়তে মানত করলে রোগমুক্তি ও মনোবাসনা পূরণ হয়। সেই বিশ্বাস থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার, বৈদেশিক মুদ্রা, এমনকি গবাদিপশু পর্যন্ত দান করে থাকেন।
প্রায় আড়াইশ বছর আগে নরসুন্দা নদীর পাড়ে এক আধ্যাত্মিক ব্যক্তির আগমন থেকেই এই মসজিদের সূচনা। সময়ের পরিক্রমায় তাঁর সমাধির পাশে গড়ে ওঠে আজকের পাগলা মসজিদ, যা আজ শুধু কিশোরগঞ্জ নয়, পুরো দেশের মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
Leave a Reply