ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর দেশের রপ্তানি খাতে কিছুটা আলোচনার জন্ম হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে বড় কোনো প্রভাব পড়বে না বাংলাদেশের রপ্তানি কার্যক্রমে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত, যা দেশের প্রধান রপ্তানি খাত, এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বড় কোনো ধাক্কা খাবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আকাশপথে দ্রুত ডেলিভারির জন্য অনেক বিদেশি ক্রেতা দিল্লি হয়ে পণ্য গ্রহণ করতেন। তবে এটি মূলত ‘ফার্স্ট ফ্যাশন’ ক্যাটাগরির পণ্যগুলোর ক্ষেত্রেই প্রয়োগ হতো। সেই তুলনায় মোট রপ্তানির পরিমাণের একটি ছোট অংশই এই রুটে পরিবহন হতো। ফলে দিল্লি রুট বন্ধ হলেও বাংলাদেশের অন্যান্য রপ্তানি চ্যানেল যেমন চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর এবং শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যথারীতি চালু থাকছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে,
ভারতের এমন সিদ্ধান্তের ফলে হয়তো সাময়িকভাবে ঢাকার বিমানবন্দরের উপর কার্গো চাপ বাড়বে, এবং কিছুটা খরচও বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে এতে দেশের রপ্তানি সম্ভাবনার স্থায়িত্ব বা সক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
বহুদিন ধরেই ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ওয়ারহাউজ অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতায় ভুগছে। গত দুই দশকে রপ্তানি তিন গুণ বেড়ে গেলেও সেই অনুপাতে উন্নয়ন হয়নি কার্গো ব্যবস্থায়। তাছাড়া স্ক্যানিং ও আধুনিক ইডিএস প্রযুক্তির অভাব, অতিরিক্ত কাস্টমস জটিলতা এবং পরিচালন ব্যয় দেশের এয়ার কার্গো পরিবহনকে তুলনামূলক ব্যয়বহুল করে তুলেছে।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারে ভারতের অনুমতি দিলেও বর্তমানে ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অর্থনৈতিক স্বার্থে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আলোচনার দরকার ছিল। তাদের মতে, প্রতিবেশী দেশ ভুল করলেও বাংলাদেশকে দায়িত্বশীলতা বজায় রেখে ইতিবাচক নীতি গ্রহণ করা উচিত।
অর্থনীতিবিদদের ভাষ্যে, মালদ্বীপ, নেপাল ও ভুটান এই সিদ্ধান্তের আওতার বাইরে থাকায় বাংলাদেশের আঞ্চলিক রপ্তানি ব্যবস্থায় বড় প্রভাব পড়বে না। তবে আকাশপথে যে ১০–১২ শতাংশ তৈরি পোশাক রপ্তানি হতো, তা অন্য পথ দিয়ে মেটাতে প্রস্তুত থাকতে হবে।
Leave a Reply