যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে (এমবিএস) অভূতপূর্ণ সম্মান দিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন। মার্চিং ব্যান্ড, অশ্বারোহী গার্ড ও সামরিক ফ্লাইওভারের জমকালো আয়োজনেই বোঝা গেছে—ওয়াশিংটন ও রিয়াদের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। এই বৈঠকে ব্যবসা, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে শুরু করে আঞ্চলিক শান্তি—সবকিছু নিয়েই দুই নেতা কথা বলেন।
সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্ভাব্য সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ নিয়েও ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন উভয় পক্ষ। তবে এমবিএস পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন—দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সুস্পষ্ট পথনকশা ছাড়া অগ্রগতি সম্ভব নয়। ট্রাম্পও জানান, বিষয়টি নিয়ে “খুব ভালো আলোচনা” হয়েছে এবং শিগগিরই আবার কথা হবে।
সবচেয়ে বড় ঘোষণা আসে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে। ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি আরবকে “মেজর নন–নেটো অ্যালাই” হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। এতে সৌদি আরব দ্রুতগতিতে মার্কিন অস্ত্র ও সামরিক প্রযুক্তি পাবে। একইসঙ্গে দুই দেশ কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক প্রভাব ও সৌদি নিরাপত্তা আরও জোরদার করবে। ট্রাম্প আরও নিশ্চিত করেন—সৌদিকে সর্বাধুনিক এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি করা হবে, কোনো ধরনের ডাউনগ্রেড ছাড়াই।
ইরান ইস্যুতেও নরম সুর শোনা গেছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ইরান এখন আলোচনায় ফিরতে আগ্রহী, এবং যুক্তরাষ্ট্রও সমাধানের পথ খুঁজছে। এমবিএস জানান, ওয়াশিংটন-তেহরান সমঝোতা হলে সৌদি আরব তাতে সহযোগিতা করবে।
অর্থনীতির ক্ষেত্রেও এসেছে বড় ঘোষণা। ট্রাম্প দাবি করেন, সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে সম্মত হয়েছে, যা পরে ১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। এমবিএসও স্বীকার করেন—প্রযুক্তি, এআই, রেয়ার ম্যাটেরিয়ালসহ বিভিন্ন খাতে দুই দেশের বিনিয়োগ বাড়বে।
বৈঠকজুড়ে দুই নেতাকে হাসিমুখে প্রশংসাসূচক মন্তব্য করতে দেখা গেছে। ট্রাম্প যুবরাজকে ‘চমৎকার ও উজ্জ্বল নেতা’ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং মানবাধিকার ক্ষেত্রেও তাঁর অগ্রগতির প্রশংসা করেন। সাংবাদিকদের কঠিন প্রশ্নের মুখে ট্রাম্প বারবার এমবিএসকে রক্ষা করেন এবং এক পর্যায়ে এক সাংবাদিককে তীব্র ভর্ৎসনা করেন।
একই সময় যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস জেফরি এপস্টিন সংক্রান্ত ফাইল প্রকাশে বাধ্য করার বিল পাস করে, যার প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প সাংবাদিককে সরাসরি “terrible reporter” বলে আক্রমণ করেন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.