সুদানের দারফুর অঞ্চলের কৌশলগত শহর এল-ফাশারে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF)–এর হাতে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব, মিসর, কাতার, তুর্কিয়ে ও জর্ডানসহ বেশ কয়েকটি আরব দেশ। এই দেশগুলো মঙ্গলবার একযোগে ‘ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন’-এর নিন্দা জানিয়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের প্রকাশিত নতুন স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, শহরের বিভিন্ন স্থানে মানুষের মৃতদেহের মতো বস্তু এবং রক্তাক্ত মাটির দাগ। প্রতিবেদনে বলা হয়, এল-ফাশারে আরএসএফের দখলদারিত্বের পরপরই এসব দৃশ্য ধরা পড়ে, যা গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের ইঙ্গিত দেয়।
২০২৩ সাল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে চলমান গৃহযুদ্ধে এখন পর্যন্ত দশ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং ১ কোটি ২০ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গত রবিবার ১৭ মাসের অবরোধ শেষে এল-ফাশার শহরটি দখল করে নেয় আরএসএফ। সুদানের সরকারের দাবি, এরপর থেকে অন্তত দুই হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা ও ত্রাণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, শহরে ব্যাপক নাগরিক হত্যাকাণ্ড, ঘরবাড়িতে হামলা, নারী ও শিশুদের ওপর যৌন সহিংসতা এবং পালানোর পথের ওপর নির্বিচার গুলি চালানো হয়েছে।
সৌদি আরব এই ঘটনাকে “গভীর উদ্বেগজনক” বলে অভিহিত করে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছে।
মিসর তাৎক্ষণিক মানবিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণার দাবি জানিয়েছে।
তুর্কিয়ে বলেছে, “নিরপরাধ নাগরিকদের ওপর আক্রমণ বন্ধ করতে হবে এবং মানবিক সহায়তা অবাধে পৌঁছাতে দিতে হবে।”
কাতার ও জর্ডানও একযোগে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সুদানের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও ঐক্যের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস এল-ফাশারের পতনকে “যুদ্ধের ভয়াবহ নতুন ধাপ” হিসেবে উল্লেখ করে বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
গবেষক ন্যাথানিয়েল রেমন্ড বলেন, “স্যাটেলাইট চিত্রে যে দৃশ্য দেখা গেছে, তা গণহত্যারই প্রমাণ। মাত্র ৩৬ ঘণ্টার ব্যবধানে শহরজুড়ে ছড়িয়ে আছে শত শত লাশের দেহাবশেষ।”
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আরএসএফের এসব কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পড়তে পারে, এমনকি তা গণহত্যারও সামিল হতে পারে।