সিলেট সীমান্তের প্রতাপুরে দিনভর টানটান উত্তেজনা। একদিকে ভারতের জারি করা রাত্রিকালীন কারফিউ, অন্যদিকে সীমান্ত জুড়ে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)-এর সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থান—দুই দেশই যেন মুখোমুখি প্রস্তুত।
বিশেষ করে মৌলভীবাজার সীমান্তে বিএসএফের (ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী) অনুপ্রবেশ চেষ্টাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতি নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায় কারফিউ কার্যকর করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে জারি করা হয়েছে নির্দেশ, যা থেকে স্পষ্ট—তারা জরুরি প্রতিক্রিয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত।
প্রতাপুর সীমান্তে এখন থমথমে অবস্থা। এখানে বিজিবির সদস্যরা শুধু নিয়মিত টহলেই থেমে নেই, সঙ্গে রয়েছে ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ইউনিট এবং আধুনিক প্রযুক্তি সহায়তায় পরিচালিত অটোমেটেড টহল যান (ATP)। দুর্গম এলাকায় নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে এই ATP ব্যবস্থাকে বিশেষভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে।
এই প্রতাপুরই সেই অঞ্চল, যেটি ২০০১ সালে পাদুয়া সংঘর্ষের সাক্ষী ছিল—যেখানে বিএসএফ হঠাৎ আগ্রাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অংশ দখলের চেষ্টা চালায়। সে সময় বিজিবির (তৎকালীন বিডিআর) শক্ত জবাবে সফলভাবে প্রতিহত হয় সেই হামলা, রক্ষা পায় বাংলাদেশের সার্বভৌম সীমান্ত। সেই ঘটনার স্মৃতি যেন আজ আবারও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
বর্তমান উত্তেজনার পেছনে রয়েছে সীমান্ত দিয়ে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশের চেষ্টার অভিযোগ। মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে কিছু ভারতীয় নাগরিককে কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা হয়েছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বিজিবি এ ধরনের যেকোনো অনুপ্রবেশ রুখে দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিজিবির পায়ে হেঁটে টহল এবং প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হলেও সবার মনে প্রশ্ন—এই উত্তেজনা কতটা স্থায়ী হবে?
সীমান্ত পরিস্থিতির নিয়মিত আপডেট জানাতে আজ সারাদিন প্রতাপুর সীমান্তে মোতায়েন রয়েছেন আমাদের প্রতিনিধি দল। সীমান্তে শান্তি বজায় রাখা এখন সময়ের বড় দাবি।
Leave a Reply