ঢাকার বাইরে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থানান্তর সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ আইনজীবীরা। প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তারা একে ‘আদালত অবমাননার শামিল’ বলে দাবি করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া আইনজীবীরা বলেন, সুপ্রিম কোর্ট পূর্বেই ঢাকার বাইরে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থানান্তর না করার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছিল। অথচ, সেই নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে সংস্কার কমিশন বেঞ্চ স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়েছে—যা সরাসরি আদালতের মর্যাদায় আঘাত।
তাদের মতে, বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপন করা হলে ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হবে, বিচারিক স্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং রাজনৈতিক প্রভাব বাড়বে, যা বিচারব্যবস্থাকে দুর্বল করে তুলবে।
এক আইনজীবী বলেন,
“ঢাকার বাইরে মেধাবী আইনজীবীর সংকট রয়েছে। ফলে মানসম্পন্ন শুনানি বা বিচার নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।”
এদিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংলাপে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে ভিন্নমত দেখা যায়।
জামায়াতের প্রতিনিধি হামিদুর রহমান আযাদ প্রত্যেক উপজেলায় আদালত স্থাপনের পক্ষে মত দেন।
অন্যদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন:
“সব উপজেলায় ঢালাওভাবে আদালত স্থাপন যুক্তিসঙ্গত নয়। দুরত্ব, যাতায়াত ব্যবস্থা ও মামলার চাপ—সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সুনির্দিষ্ট উপজেলাগুলোতে আদালত বসানো যেতে পারে।”
বর্তমানে দেশে উপজেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে আদালতের সম্প্রসারণে সংস্কার প্রক্রিয়া চলছে, যার আওতায় হাইকোর্টের অংশবিশেষ ঢাকার বাইরে স্থানান্তরের প্রস্তাব উঠেছে। বিচার বিভাগের কাঠামোগত ভারসাম্য এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের দিক থেকে এই প্রস্তাব বিতর্কের কেন্দ্রে চলে এসেছে।
Leave a Reply