হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহুল আলোচিত তৃতীয় টার্মিনাল চালুর সময় নিয়ে বাড়ছে অনিশ্চয়তা। আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন এই টার্মিনালের সফট ওপেনিং হয়েছিল ২০২৩ সালের অক্টোবরে, আর আশ্বাস দেয়া হয়েছিল ২০২৪ সালের অক্টোবরে পূর্ণাঙ্গ অপারেশনে যাবে। কিন্তু প্রায় দুই বছর পেরিয়ে গেলেও কার্যক্রম শুরুর মতো প্রস্তুতি নিতে পারেনি সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।
এরই মধ্যে ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণকাজ শেষ হলেও কার্যক্রম শুরুর বিলম্বে উদ্বেগ বাড়ছে খাত সংশ্লিষ্টদের। প্রকল্পে জাইকার দেয়া ১৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ২০২৪ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আলোচনার মাধ্যমে তা এক বছর পিছিয়েছে। তবুও চলতি বছরেও টার্মিনাল চালুর সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টদের মত, দ্য বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল হক বলেন, “জাপানিজ কনসোর্টিয়ামকে অপারেশনের দায়িত্ব দেয়ার কথা দীর্ঘদিন ধরে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান এখনো ঠিক না হলে, তারা হঠাৎ করে এসে কীভাবে দায়িত্ব নেবে?”
বাংলাদেশ বিমানের সাবেক পরিচালক নাফীস ইমতিয়াজউদ্দিন বলেন, “টার্মিনাল চালু করা ছাড়া উপায় নেই। ঋণ শোধ করতে হলে এটিকে অপারেট করতে হবে। না হলে আয়ের উৎস কোথা থেকে আসবে?”
সিভিল এভিয়েশনের অবস্থান বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক জানান, “যত দ্রুত সম্ভব অপারেশনাল মেইনটেন্যান্সে যেতে আমরা চেষ্টা করছি। তবে এখনই সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ বলা সম্ভব নয়।”
চালুতে বিলম্বের কারণ
টার্মিনাল চালুতে দেরির পেছনে রয়েছে একাধিক জটিলতা—
জাপানিজ কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি
প্রায় ৬ হাজার জনবল নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ বাকি
মেশিন ক্যালিব্রেশন ও পরীক্ষানিরীক্ষা অসম্পূর্ণ
গ্রাউন্ড সার্ভিসের প্রস্তুতি শেষ হয়নি
যাত্রী ও বিনিয়োগকারীদের চাপ সামলাতে দ্রুত টার্মিনাল চালুর দাবি জানালেও, এখনো কোনো নির্দিষ্ট তারিখ দিতে পারছে না সিভিল এভিয়েশন। ফলে দেশের অন্যতম বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পটি নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছেই না।
Leave a Reply