রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন যে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চল রাশিয়া “শক্তি প্রয়োগ করেই” দখলে নেবে যদি না ইউক্রেনের সেনারা সেখান থেকে সরে দাঁড়ায়। ভারত সফরের আগে ইন্ডিয়া টুডে টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকদের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠক “খুবই ফলপ্রসূ” হলেও যুদ্ধবিরতির জন্য কোনো সমঝোতা হয়নি। তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে, রাশিয়ার লক্ষ্য একই—দনবাস অঞ্চল পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া, যা তিনি “মুক্ত করার” কথা উল্লেখ করেন।
পুতিনের এই মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের সরাসরি বিরোধিতা করে। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে, তার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে বৈঠকে পুতিনের আচরণে “যুদ্ধ শেষ করতে চাওয়ার” ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। কিন্তু পুতিন শক্তভাবেই জানান, দনবাস ছাড়ার কোনো প্রশ্নই নেই এবং রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষা না হলে কোনো শান্তিচুক্তি হবে না।
এদিকে মার্কিন আলোচক উইটকফ ও কুশনার বৃহস্পতিবার ফ্লোরিডায় ইউক্রেনের শীর্ষ শান্তি-আলোচক রুস্তেম উমেরভের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানা গেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আবারও বলেন যে, তিনি ইউক্রেনের ভূখণ্ড ছাড়ের কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না এবং দেশটির সংবিধানও তা নিষিদ্ধ করে।
রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২৮ দফা পরিকল্পনা নিয়ে আবারও আলোচনা হচ্ছে বলে টাস সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, যদিও এর কিছু অংশ জেনেভায় আলোচনায় সংশোধন করা হয়েছিল। পুতিন বলেছেন, আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কয়েকটি প্যাকেজে প্রস্তাবগুলো ভাগ করেছে, কিন্তু মূলত তা একই রকম রয়েছে।
এদিকে ইউক্রেনের ভেতরে রুশ হামলা অব্যাহত রয়েছে। ক্রিভি রিহ শহরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ছয়জন আহত হয়েছে, যার মধ্যে একটি তিন বছরের শিশু আছে। খেরসনে একটি ছয় বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছে গোলাবর্ষণে। ওডেসায় ড্রোন হামলায় আটজন আহত হয় এবং বেসামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, কৃষ্ণসাগর ও নভোরোসিস্কে তেল ট্যাংকার ও পাইপলাইন টার্মিনালে ইউক্রেনের হামলা শান্তি প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছে।
বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের মোট ১৯.২ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে, যার মধ্যে ক্রিমিয়া, পুরো লুহানস্ক, ডোনেৎস্কের ৮০ শতাংশের বেশি, খেরসন ও জাপোরিঝিয়ার বড় অংশসহ অন্যান্য অঞ্চল রয়েছে। তবে ডোনেৎস্কের প্রায় পাঁচ হাজার বর্গকিলোমিটার এখনো ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং পোকরোভস্ক শহরের উত্তরাংশে ইউক্রেনীয় বাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.