রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন একটি ‘আপডেটেড ও রিফাইন্ড’ শান্তি কাঠামো ঘোষণা করেছে। ওয়াশিংটনের পূর্বের খসড়া প্রস্তাবটি মস্কোর পক্ষে ঝুঁকে আছে—এমন সমালোচনার পর নতুন পরিকল্পনা নিয়ে দুই দেশ জেনেভায় একাধিক বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব পুরোপুরি সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যেই এই সংশোধিত প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। উভয় পক্ষের মতে, আলোচনায় ‘অগ্রগতি’ হয়েছে এবং শান্তির জন্য প্রয়োজনীয় পরবর্তী পদক্ষেপগুলো এখন আরও স্পষ্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনার কয়েকটি অংশ—বিশেষ করে ন্যাটো ইস্যু—সংশোধন করা হয়েছে যেন ইউক্রেনের অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্য আসে। যদিও তিনি নির্দিষ্টভাবে জানাননি ইউক্রেন কোনো রাশিয়ান দাবি, বিশেষত সীমান্ত ছাড় বা ভূখণ্ডসংক্রান্ত কোনো বিষয়ে, সমঝোতা করেছে কি না।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলে মন্তব্য করার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়ে দেন—যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্যক্তিগতভাবে ট্রাম্পের সাহায্যের জন্য তিনি কৃতজ্ঞ। ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব ফাঁস হওয়ার পর থেকেই ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পরিকল্পনায় ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ছোট করার প্রস্তাব, ক্রিমিয়া–দোনেৎস্ক–লুহানস্ক ত্যাগ করার বিষয়সহ কয়েকটি পয়েন্টকে ‘মস্কোর দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ’ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
জেলেনস্কি এক ভাষণে বলেন, এ ধরনের প্রস্তাব ইউক্রেনকে “সম্মান হারানো” বা “মূল সহযোগী হারানোর” ঝুঁকির মুখে ফেলে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান Ursula von der Leyenও স্পষ্টভাবে জানান—যে কোনো শান্তি পরিকল্পনায় ইউক্রেনের স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারকে সম্মান করতেই হবে, যার মধ্যে রয়েছে দেশটির ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের ইচ্ছা।
রুবিও আশা প্রকাশ করেছেন—বৃহস্পতিবার ট্রাম্প নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই একটি চূড়ান্ত খসড়া তৈরি হতে পারে, যদিও এটি এখনও ‘একটি জীবন্ত ও পরিবর্তনশীল দলিল’। যেকোনো চূড়ান্ত সমঝোতার ক্ষেত্রে রাশিয়ার অনুমোদনও লাগবে বলে তিনি জানান। একই সময়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মন্তব্য করেছেন—ট্রাম্পের পরিকল্পনা চূড়ান্ত আলোচনার ভিত্তি হতে পারে, তবে ইউক্রেন আলোচনায় না আসলে রাশিয়া আরও এগোবে।