রাশিয়ার ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে জ্বালানি তেলের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তবে এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি করেছে ক্রেমলিন। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলাকালে পাল্টাপাল্টি হামলার পাশাপাশি শান্তি আলোচনায় গতি আনার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, যার প্রতি মস্কোও একাত্মতা জানিয়েছে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের মাধ্যমে শুরু হওয়া যুদ্ধ ইতোমধ্যে তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য অনুযায়ী, এই যুদ্ধে উভয় পক্ষ মিলিয়ে অন্তত ১২ লাখ মানুষ হতাহত হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইইউ একাধিকবার রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সর্বশেষ ১৮তম নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ ঘোষণা করেন ইইউ পররাষ্ট্র বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা কাজা কালাস।
নতুন নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার জ্বালানি তেলের সর্বোচ্চ মূল্যসীমা নির্ধারণ করে তা কমিয়ে আনা হয়েছে ৪৭.৬০ ডলারে, যা আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের তুলনায় প্রায় ১৫ শতাংশ কম। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য রাশিয়ার আয়ের ওপর আর্থিক চাপ বৃদ্ধি। যদিও ক্রেমলিন জানিয়েছে, তারা নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে অভ্যস্ত এবং ইইউ’র নতুন পদক্ষেপকে অবৈধ বলেও অভিহিত করেছে।
সামরিক ময়দানেও উত্তপ্ত পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। রাশিয়া দাবি করেছে, তারা ইউক্রেনের কামিয়ানস্কে, দেহতিয়ারনে ও পোপিভ ইয়ার দখল করেছে। একই সঙ্গে ক্রিমিয়া, ব্রায়ানস্ক ও মস্কো অঞ্চলে ৭৩টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
এদিকে ইউক্রেনও নিজেদের প্রস্তুতি বাড়াচ্ছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা অনুযায়ী তারা ড্রোন কিনবে এবং নিজস্ব অস্ত্র উৎপাদন ৪০ থেকে ৫০ শতাংশে উন্নীত করবে। ফ্রন্টলাইনে পরীক্ষামূলক অস্ত্র ব্যবহারেরও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর কড়া সমালোচনা করেছে মস্কো। রুশ পার্লামেন্ট এমনকি একটি বিল পাস করেছে, যাতে ইউক্রেনের পক্ষে গান, পোস্ট বা অন্য যেকোনো প্রচারকর্ম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
শান্তি আলোচনা নিয়েও নতুন বার্তা দিয়েছেন জেলেনস্কি। দ্বিতীয় ইস্তাম্বুল চুক্তি বাস্তবায়নে গতি আনার কথা বলেছেন তিনি, যার মাধ্যমে ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় পূর্ণ সমন্বয় নিশ্চিত করতে চান। এই আহ্বানে সাড়া দিয়েছে মস্কোও, শান্তি আলোচনায় গতি আনার ব্যাপারে সমর্থন জানিয়েছে তারা।
Leave a Reply