বাগেরহাটের রামপালে অবস্থিত ভারত-বাংলাদেশের যৌথ কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি শুরু থেকেই নানা সমালোচনার মুখে। এবার উঠে এসেছে চরম বেতন বৈষম্যের অভিযোগ। হাইকোর্টে দায়ের করা এক রিটে বলা হয়েছে, একই পদে কর্মরত একজন বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার যেখানে পান মাত্র ১ লাখ টাকা, সেখানে একজন ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার পাচ্ছেন প্রায় ২৫ লাখ টাকা।
আইনজীবী সালেকুজ্জামান সাগরের করা ওই রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন। এর পরপরই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রামপালে অভিযান চালায়। দুদকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের নিজস্ব নীতিমালা থাকলেও ভারতীয় কর্মকর্তাদের বেশি সুবিধা দেয়া হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী একজন বিদেশি কর্মকর্তার বিপরীতে ২০ জন দেশি কর্মকর্তা থাকার কথা থাকলেও সেটি মানা হচ্ছে না।
বর্তমানে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৫২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ভারতীয় নাগরিক আছেন ৩৬ জন। এখানে একজন প্রকল্প পরিচালক (পিডি), পাঁচজন জিএম, ১৫ জন এজিএম ও নয়জন ডিজিএম রয়েছেন। ঢাকার অফিসেও রয়েছেন এমডি, চিফ অফিসার, জিএম, ডিজিএম ও এজিএম পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, নিয়োগে বৈষম্য, টেন্ডার অনিয়ম এবং মালামাল লুটপাটের প্রমাণ মিলেছে। তবে এসব বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি রামপাল কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, বেতনের তারতম্য থাকলেও তা যৌথ চুক্তির ভিত্তিতেই নির্ধারিত।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ২০২২ সালের ডিসেম্বরে উৎপাদন শুরু করে। প্রায় ১,৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার এই কেন্দ্রটি দেশের অন্যতম বৃহৎ কয়লাভি ত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। আগস্ট মাসে কেন্দ্রটির উৎপাদন হার ছিল ৭৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ, যা জাতীয় গ্রিডে মোট বিদ্যুতের প্রায় ৭ দশমিক ৬২ শতাংশ যোগান দিয়েছে। গত তিন মাসে ধারাবাহিকভাবে ৬০০ মিলিয়নের বেশি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে এই কেন্দ্র।
Leave a Reply