নামাজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম এবং প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর ফরজ ইবাদত। দৈনন্দিন ব্যস্ততা, কাজ কিংবা যে কোনো অজুহাতই হোক—নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ আদায় করা থেকে বিরত থাকার সুযোগ নেই। কোরআন ও হাদিসে বারবার নামাজের গুরুত্ব ও তা সঠিকভাবে আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ইসলামি বর্ণনায় এমন কিছু নামাজির কথাও এসেছে, যাদের নামাজ থাকলেও পরকালে তারা ভয়াবহ শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন—
“নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ।”
(সুরা নিসা, আয়াত: ১০৩)
হাদিসেও নামাজের গুরুত্ব স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন—আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল কোনটি? রাসুল ﷺ উত্তরে বলেন, সময়মতো নামাজ আদায় করা। (বুখারি, হাদিস: ৫০২)
তবে কোরআন ও হাদিসে তিন শ্রেণির নামাজির ব্যাপারে কঠোর সতর্কবার্তা এসেছে—যারা নামাজ আদায় করলেও তার প্রকৃত উদ্দেশ্য ও নিয়ম মানে না।
১. লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে নামাজ আদায়কারী
যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নয়, বরং মানুষের প্রশংসা পাওয়ার আশায় নামাজ পড়ে—তাদের ব্যাপারে কোরআনে কঠোর ভাষায় সতর্ক করা হয়েছে।
২. নামাজে অমনোযোগী ব্যক্তিরা
নামাজ আদায় করলেও যাদের মন পড়ে থাকে দুনিয়ার কাজে, যারা নামাজকে গুরুত্বহীনভাবে আদায় করে—তাদের নামাজ আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
পবিত্র কোরআনে এ দুই শ্রেণির নামাজির ব্যাপারে বলা হয়েছে—
“অতএব দুর্ভোগ সেই নামাজ আদায়কারীদের জন্য, যারা নিজেদের নামাজে অমনোযোগী এবং লোক দেখানোর জন্য তা করে।”
(সুরা মাউন, আয়াত: ৪–৬)
৩. নামাজে ‘চুরি’ করা ব্যক্তি
নামাজে রুকু-সিজদা ঠিকমতো আদায় না করা, তাড়াহুড়ো করে ফরজ অংশ শেষ করা—এটিকেও রাসুল ﷺ নামাজে চুরি বলে আখ্যা দিয়েছেন।
আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন—
“সবচেয়ে বড় চোর হলো সে, যে নামাজে চুরি করে।”
সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, নামাজে চুরি কীভাবে হয়?
তিনি বললেন, রুকু ও সিজদা পূর্ণ না করা।
(মেশকাত, হাদিস: ৮৮৫)
ইসলামে নামাজ শুধু আদায় করলেই যথেষ্ট নয়; বরং খুশু-খুজু, একাগ্রতা ও নিয়ম মেনে নামাজ আদায় করাই মূল উদ্দেশ্য। লোক দেখানো, অমনোযোগিতা কিংবা তাড়াহুড়ো করে নামাজ শেষ করা—এসব অভ্যাস একজন মুসলমানকে ইবাদতের প্রকৃত ফল থেকে বঞ্চিত করতে পারে।
তাই প্রত্যেক মুমিনের উচিত—নামাজকে জীবনের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তা যথাযথভাবে আদায় করা








Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.