ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে— বেলফোর ঘোষণা (১৯১৭) থেকে ১০৮ বছর পর এবং ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৭৭ বছর পর।
রোববার এক ভিডিও বার্তায় স্টারমার বলেন—
“মধ্যপ্রাচ্যে বাড়তে থাকা ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে আমরা শান্তি এবং দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে পদক্ষেপ নিচ্ছি।”
যুক্তরাজ্যের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একই দিনে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগালও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ৮০তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (UNGA) অধিবেশন শুরুর দুদিন আগে এ ঘোষণা আন্তর্জাতিক মহলে বড় ধরনের আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরী ধ্বংস করছে, খাদ্য–ওষুধ বন্ধ করে দিচ্ছে, মানুষকে বাস্তুচ্যুত করছে। পশ্চিম তীরেও প্রতিদিন বসতি স্থাপনকারী ও সেনাদের হামলায় ফিলিস্তিনিদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটেই লন্ডনের ঘোষণা এলো।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার বলেন, এটি ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের স্বীকৃতি।
উপপ্রধানমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি সতর্ক করে বলেন, এ স্বীকৃতি রাতারাতি রাষ্ট্র গড়ে দেবে না, তবে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথ খোলা রাখবে।
স্টারমার জোর দিয়ে বলেন, হামাসের কোনো স্থান ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রে নেই।
রামাল্লায় এক সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারসেন আগাবেকিয়ান শাহিন বলেন—
“এটি ফিলিস্তিনি জনগণের কাছে আশার বার্তা, স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি।”
ব্রিটিশ এমপি লায়লা মোরান, যিনি ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত, বলেছেন—
“এটি ন্যায়ের পথে ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ। দুঃখজনকভাবে, আমাদের এ পর্যায়ে পৌঁছাতে একটি গণহত্যা দেখতে হলো।”
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্বীকৃতিকে “হামাসের জন্য পুরস্কার” আখ্যা দিয়ে বলেছেন—
“জর্ডান নদীর পশ্চিমে কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে না।”
ফার-রাইট মন্ত্রীরা ওয়েস্ট ব্যাংক (জুদিয়া-সামারিয়া) অবিলম্বে সংযুক্ত করার দাবি তুলেছেন। জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি মন্ত্রিসভায় এ প্রস্তাব তুলবেন।
ফ্রান্স ও সৌদি আরব সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘে যৌথ সম্মেলন আয়োজন করছে দ্বিরাষ্ট্র সমাধান নিয়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাজ্যের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন এবং নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি আলোচনায় আসবে।
Leave a Reply