ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে শুরু হয়েছে ১৭তম ব্রিকস সম্মেলন। তবে এবারের সম্মেলন ঘিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে দুই প্রভাবশালী সদস্য—চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন—এর অনুপস্থিতি। তাঁদের অনুপস্থিতি শুধু ব্যক্তিগত অনুপস্থিতি নয়, বরং ব্রিকস গোষ্ঠীর ভেতরকার ঐক্য ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়েই নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
২০১২ সালের পর এই প্রথমবারের মতো ব্রিকস সম্মেলনে সরাসরি অংশ নিচ্ছেন না শি জিনপিং। তার পরিবর্তে প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী লি কুয়াং। বিশ্লেষকদের মতে, সম্প্রতি শি’র আন্তর্জাতিক উপস্থিতি নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে, যার পেছনে চীনের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও রাজনৈতিক ভারসাম্যের প্রশ্ন রয়েছে।
অন্যদিকে, ভ্লাদিমির পুতিনের অনুপস্থিতি অনেকটা বাধ্যতামূলক। ইউক্রেন যুদ্ধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার দায়বদ্ধতায় ব্রাজিল সরকার তাকে আমন্ত্রণ জানাতে পারছে না। রোম স্ট্যাটিউটের সদস্য হিসেবে ব্রাজিলের ওপর আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে, যা সম্মেলনে পুতিনের অংশগ্রহণকে কঠিন করে তোলে।
রিও সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে উঠে এসেছে—
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহযোগিতা
জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নীতিমালা
বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা
এছাড়া, কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র ইসরায়েলের গাজা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবং ইরানের ওপর আক্রমণের প্রতিবাদে আরও জোরালো অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত BRICS (Brazil, Russia, India, China, South Africa) গোষ্ঠী এখন এক নতুন অধ্যায়ে। সম্প্রতি ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, ইথিওপিয়া ও ইন্দোনেশিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করে সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১-তে। এতে গোষ্ঠীটি দাবি করছে—
বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক
মোট ভূপৃষ্ঠের ৩৬%
বিশ্ব অর্থনীতির প্রায় ২৫%-এর প্রতিনিধিত্ব
তবে বাস্তবিক অর্থে এই প্রতিনিধিত্ব কতটা কার্যকর, তা নির্ভর করছে ভবিষ্যতের অভ্যন্তরীণ ঐক্য, কূটনৈতিক সমন্বয় ও নীতিগত অবস্থানের ওপর।
Leave a Reply