লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ সামরিক কমান্ডার হাইসম আলী তাবাতাবাই নিহত হয়েছেন। হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় দাহিয়াহ এলাকার হারেত হরেইক অঞ্চলে পরিচালিত “বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ” ইসরায়েলি হামলায় এই কমান্ডারসহ অন্তত পাঁচজন প্রাণ হারান। ইসরায়েল দাবি করেছে যে এই হামলার মূল লক্ষ্যই ছিল তাবাতাবাই, যিনি সংগঠনটির সশস্ত্র শাখার চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির পর সবচেয়ে উচ্চপদস্থ হিজবুল্লাহ নেতা যাকে ইসরায়েল হত্যা করল।
হামলায় ২৮ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, হারেত হরেইকের আল-আরিদ স্ট্রিটের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে দুইটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়, যার ফলে ভবনসহ আশপাশের গাড়ি ও স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ নেতা মাহমুদ কৌমাতি বলেছেন, এই হামলা স্পষ্টভাবে “রেড লাইন” অতিক্রম করেছে এবং এ ধরনের হামলা পুরো লেবাননে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, তাবাতাবাই হত্যাকাণ্ডের ফলে হিজবুল্লাহ এখন কঠিন অবস্থায় পড়েছে। তারা প্রতিশোধ না নিলে আরও বিপজ্জনক হামলার মুখে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে, আর পাল্টা হামলা চালালে এটি বড় মাত্রার যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে, যা ইসরায়েল রাজনৈতিকভাবে নিজের পক্ষে ব্যবহার করতে পারে। এদিকে লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আওন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত হস্তক্ষেপ করে ইসরায়েলি আগ্রাসন থামানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
গত এক বছরে ইসরায়েল লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় প্রতিদিনই হামলা চালাচ্ছে এবং মাঝে মাঝে বৈরুতেও আঘাত হেনেছে। সর্বশেষ দক্ষিণ লেবাননের একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ড্রোন হামলায় ১৩ জন নিহত হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণের চাপ দিয়ে আসছে, যদিও লেবানন সরকার দাবি করেছে, ইসরায়েলের হামলা চলতে থাকলে এমন পদক্ষেপ বাস্তবসম্মত নয়। তাবাতাবাইয়ের মৃত্যু মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনাকে আরও জটিল করে তুলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।