বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে আলোচিত ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট হলেও জাতীয় দলের নির্বাচনে এই লিগের পারফরম্যান্সকে কতটুকু গুরুত্ব দেওয়া হয়, তা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তান সফরের জন্য ঘোষিত বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা হয়নি চলতি আসরের সেরা পারফর্মারদের, অথচ সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ব্যর্থ ক্রিকেটাররাও রয়েছেন স্কোয়াডে। নির্বাচকদের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মধ্যেও তৈরি হয়েছে সমালোচনার ঝড়।
বিপিএলে ব্যাটে-বলে দারুণ পারফর্ম করে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয়ী মেহেদী হাসান মিরাজ জায়গা পাননি ১৬ সদস্যের স্কোয়াডে। একইভাবে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মোহাম্মদ নাঈম শেখ, স্ট্রাইক রেটের বিচারে অন্যতম সেরা মাহিদুল হাসান অঙ্কনকেও রাখা হয়নি মূল দলে—তাদের ঠাঁই হয়েছে নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে হালকা প্রতিযোগিতায়। মিরাজ বিপিএলে ৩৫৫ রান ও ১৩ উইকেট শিকার করে নজর কাড়লেও নির্বাচকদের চোখে তিনি এখনও ‘টি-টোয়েন্টি পরিকল্পনার পেছনে’।
অন্যদিকে সাবেক অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, যিনি বিপিএলে দলে জায়গা হারিয়েছেন ব্যর্থতার কারণে, আবারও জায়গা পেয়েছেন জাতীয় দলে। অভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে শান্তকে দলে রাখা হলেও মিরাজের ঘরোয়া সাফল্যকে ‘কম্বিনেশনের’ কারণে বিবেচনায় নেয়া হয়নি বলে দাবি নির্বাচক প্যানেল প্রধান গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর। এই অসামঞ্জস্যতাই নির্বাচনী নীতিতে প্রশ্ন তুলেছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের জাতীয় দলে বিপিএলের মতোই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে ফাহিম আশরাফ, খুশদিল শাহরা দলে ফিরলেও বাংলাদেশে ঘরোয়া পারফরমারদের প্রতি রয়েছে এক ধরনের অনাগ্রহ। বারবার প্রমাণিত হচ্ছে, বিসিবির কাছে বিপিএলের পারফরম্যান্সের ওজন নেই বললেই চলে।
জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ঘরোয়া লিগের গুরুত্বকে যদি উপেক্ষা করা হয়, তবে এটি শুধু প্রক্রিয়ার দুর্বলতাই নয়, বরং স্থানীয় ক্রিকেটারদের জন্যও বড় ধরনের হতাশা। এমন নির্বাচন পদ্ধতি ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় প্রতিভাদের জন্য কী বার্তা দিচ্ছে—সেটিও ভাববার সময় এসেছে।
Leave a Reply