দক্ষিণ এশিয়ার দেশ নেপাল ইতিহাসের ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকটের মুখে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা, দুর্নীতি, বেকারত্ব ও রাজনৈতিক পরিবারের সন্তানদের বিলাসী জীবনযাত্রার প্রতিবাদে তরুণদের মাত্র দুই দিনের আন্দোলনে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি।
আন্দোলনের কেন্দ্রে ছিল তথাকথিত ‘নেপো কিডস’, যাদের বিলাসবহুল জীবনযাপন সমাজের বৈষম্যকে আরও প্রকট করে তোলে। #NepoKids হ্যাশট্যাগে সামাজিকমাধ্যমে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
এই তরুণ-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনে কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহ ও এনজিও হামি নেপাল-এর সভাপতি সুদান গুরুং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। বিশেষ করে স্কুল ইউনিফর্ম পরে বই হাতে র্যালিতে অংশ নেওয়া তরুণরা প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠেন।
সরকারি দমনপীড়ন ও সহিংসতায় দুই দিনে অন্তত ১৯ জন নিহত ও ২৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবন ও শীর্ষ নেতাদের বাড়িতে হামলা চালান, এমনকি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনও আক্রমণের শিকার হয়। নিরাপত্তাহীনতায় মন্ত্রীদের সামরিক বিমানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী ওলি। এর ফলে তার চতুর্থ মেয়াদের অবসান ঘটে। তবে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কাটেনি। একের পর এক মন্ত্রীর পদত্যাগ, জোটের ভাঙন এবং সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর শঙ্কায় দেশটি অচলাবস্থার দিকে এগোচ্ছে।
এখন প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে—নেপালে কি অস্থায়ী সরকার আসবে, নাকি আগাম নির্বাচন? সেনাবাহিনী আপাতত সরাসরি ক্ষমতা নেওয়া থেকে বিরত থাকলেও বিক্ষোভকারীরা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়তে নারাজ।
Leave a Reply