নির্বাচন ইস্যুতে প্রতিবেশী দেশের উপদেশ বা নসিহত সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কারও কাছ থেকে নির্দেশনা গ্রহণ করবে না।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত বরাবরই মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের ভূমিকা খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করে। কলকাতায় বিজয় দিবসকে ‘ইস্টার্ন কমান্ড দিবস’ হিসেবে পালন করা হয় এবং তারা মনে করে তাদের সেনাবাহিনীই বিজয় অর্জন করেছে। এই বিষয়টি নিয়ে ভারতের হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছে। একইভাবে ভারতও বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ডেকেছে। আগে থেকেই ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে টানাপোড়েন রয়েছে, সেখানে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে কি না—তা এখনই বলা কঠিন। তিনি আরও বলেন, যারা মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অস্বীকার করে, তাদের আসলে সামরিক ইতিহাস সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই।
শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতে অবস্থান করে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বক্তব্য দিতেন, এখন মূলধারার গণমাধ্যমেও কথা বলছেন। তিনি আদালত থেকে শাস্তিপ্রাপ্ত হলেও পাশের দেশে বসে বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ আপত্তি জানিয়েছে, কিন্তু ভারত এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
নির্বাচন প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত নির্বাচন নিয়ে কিছু নসিহত করেছে। কিন্তু এখন এসব নসিহতের কোনো প্রয়োজন নেই। অতীতে প্রহসনমূলক নির্বাচন নিয়ে তারা একটি কথাও বলেনি। বাংলাদেশের নির্বাচন কেমন হবে, সে বিষয়ে প্রতিবেশী দেশের উপদেশ গ্রহণযোগ্য নয়।
ভিসা ইস্যুতে তিনি বলেন, ভিসা দেওয়া বা না দেওয়া সম্পূর্ণভাবে সংশ্লিষ্ট দেশের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে অন্য দেশের বাস্তবিক অর্থে কিছু বলার সুযোগ নেই। ভারতের মিশনের দিকে কোনো গ্রুপ যাওয়ার খবর পেলে তারা উদ্বিগ্ন হবে—এটা অস্বাভাবিক নয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাস করে না। এ বিষয়ে সরকারের সুস্পষ্ট নীতি রয়েছে। কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে আশ্রয় দেওয়া হবে না। কোনো একজন রাজনীতিবিদের বক্তব্য সরকারের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে না।
ভোটে পর্যবেক্ষক প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা যতটুকু সহায়তা চাইবেন, সরকার ততটুকুই দেবে। অযথা হস্তক্ষেপ করা হবে না, যাতে তাদের কাজে কোনো ভুল না হয়। পর্যবেক্ষকরা যেন স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সে ব্যবস্থাই নিশ্চিত করা হবে।
এ সময় তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বাংলাদেশে ফেরার জন্য কোনো ট্রাভেল পাস বা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আবেদন করেননি।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.