ফিলিস্তিনী কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, গাজা উপত্যকায় গত দুই বছরে ইসরায়েলি সামরিক অভিযান ও বোমাবর্ষণে অন্তত ২৩৩ জন মুসলিম আলেম, ইমাম ও ধর্মীয় নেতা এবং ২০ জন খ্রিস্টান ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি কর্তারা বলছেন, এটি কেবল সামরিক অভিযান নয়—বরং গাজার সমাজের নৈতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা। (আনাতোলি সূত্র)।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম দফতরের কর্মকর্তা ইসমাইল আল-সাওয়াবতা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সংঘাতের সময় ওই সংখ্যক ধর্মীয় নেতৃত্ব নিহত হয়েছে। একই সময়ে উল্লিখিত ক্ষতিগুলোও ঘটেছে:
৮৩৫টি মসজিদ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস,
১৮০টিরও বেশি মসজিদ আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত,
পাশাপাশি কয়েকটি বৃহৎ গির্জায়ও একাধিক বিমান হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে কিছু সময় শরণার্থীর আশ্রয় ছিল।
আল-সাওয়াবতা ও স্থানীয় সূত্ররা বলছেন, নিহত ধর্মীয় নেতারা সমুদ্র-সমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখা, ধৈর্য ও সংহতি বজায় রাখা এবং আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি জনসমাজকে সংগঠিত রাখার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতেন। তাদের ওপর এই হামলার লক্ষ্যবস্তুত্ব সম্পর্কে কর্মকর্তাদের বক্তব্য—এগুলোর উদ্দেশ্য ছিল সমাজের মানসিক স্থিতি দুর্বল করা এবং প্রতিবাদী কণ্ঠগুলো নীরব করা।
নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামগুলোর মধ্যে রয়েছেন: আল-আকসা মসজিদের খতিব ইউসুফ সালামা, গাজার আল-উমারি জামে মসজিদের খতিব ওয়ায়েল আল-জারদ, আন্তর্জাতিক মুসলিম আলেম ইউনিয়নের সদস্য ওয়ালিদ আওইজাহ এবং স্থানীয় ধর্মীয় নেতারা নায়েল মিসরান প্রমুখ।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মন্তব্য করছেন, গাজার সাম্প্রদায়িক উপাসনালয় ও ধর্মীয় নেতাদের উপর হামলা শুধু সামরিক কৌশল নয়—এরা এটাকেও মানবিক ও সাংস্কৃতিক ধ্বংসের অংশ হিসেবে দেখছেন, যার ফলে বেসামরিক জনগণের বড় ধরনের হতাহতের পাশাপাশি সামাজিক ও ধর্মীয় গঠনও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে।
Leave a Reply