গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের ক্ষেত্রে ইসরায়েল এখনও বড় ধরনের বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে গাজার সরকার। যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় প্রবেশ করা সহায়তার পরিমাণ চুক্তির মাত্র ২৪ শতাংশ বলে জানিয়েছে গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর।
শনিবার (২ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ৩,২০৩টি বাণিজ্যিক ও ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১৪৫টি ট্রাক প্রবেশ করেছে, যেখানে চুক্তি অনুযায়ী প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক ঢোকার কথা ছিল।
বিবৃতিতে বলা হয়,
“ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ত্রাণ ও বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনে যেভাবে বাধা দিচ্ছে, তাতে গাজার ২৪ লাখ মানুষের মানবিক সংকট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং ইসরায়েলকে এর পূর্ণ দায় নিতে হবে।”
গাজার প্রশাসন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যাতে তারা ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করে কোনো শর্ত ছাড়াই মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেয়।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত নতুন পথের কারণে সহায়তা সংগ্রহে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এখন গাজায় সব কনভয়কে মিশর সীমান্তের ফিলাডেলফি করিডর দিয়ে প্রবেশ করে উপকূলীয় সংকীর্ণ সড়ক দিয়ে যেতে হচ্ছে, যা ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত ও যানজটে ভরপুর।
এদিকে, যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে। শনিবার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনুস, এবং উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া শরণার্থী ক্যাম্পে বিমান, গোলা ও ট্যাংক হামলা চালানো হয়।
গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও ইসরায়েলি হামলায় ২২২ জন নিহত ও ৫৯৪ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েল দাবি করছে, হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করেছে, কারণ তারা এখনও সব ইসরায়েলি বন্দির মৃতদেহ ফেরত দেয়নি। তবে হামাস বলছে, ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও ইসরায়েলের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
শুক্রবার আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি জানায়, তারা হামাসের কাছ থেকে তিনজনের মরদেহ গ্রহণ করে ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করেছে। তবে ইসরায়েলি গণমাধ্যম বলছে, ওই মরদেহগুলোর মধ্যে কেউই নিখোঁজ ১১ জন ইসরায়েলি বন্দির নয়।