গাজার রাফাহ শহরে ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ২০০ জনের বেশি। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা UNRWA এই ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থাকে ‘মৃত্যুফাঁদ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
রোববার (১ জুন) ভোরে দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় এই নির্মম হামলা চালানো হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, খাবারের খোঁজে সেখানে জড়ো হওয়া অসংখ্য অনাহারি মানুষকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা।
UNRWA-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, “ত্রাণের নামে এই অপমানজনক ব্যবস্থায় মানুষকে দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে। অথচ গন্তব্যে গিয়ে তারা পাচ্ছে না খাবার, বরং বুক ঝাঁঝরা হয়ে যাচ্ছে বুলেটে।” সংস্থাটি আরও সতর্ক করে জানিয়েছে, নিরাপদ ও সংগঠিত ত্রাণ বিতরণ না হলে গাজায় ‘গণদুর্ভিক্ষ’ অবশ্যম্ভাবী।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মিশর থেকে পাঠানো তিন হাজারের বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক ইসরায়েলি বাধার কারণে গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না। গাজার ৯০ শতাংশ মানুষ বিশুদ্ধ পানির অভাবে ভুগছে এবং এই সংকটের কারণে ডায়রিয়া, মেনিনজাইটিসসহ নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
রাফাহ শহর বর্তমানে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যেই ত্রাণকেন্দ্রের নামে হাজার হাজার মানুষকে সেখানে টেনে নিয়ে সহিংসতার মুখে ঠেলে দিচ্ছে ইসরায়েল, এমনটাই অভিযোগ জাতিসংঘ সংস্থাটির।
এদিকে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি ও লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে গাজার এই পরিস্থিতিকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করেছেন। তারা ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
Leave a Reply