1. arshinagargroup75@gmail.com : Rofiqul Islam : Rofiqul Islam
বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন

গাজায় ‘ঘনত্ব শিবির’ পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনায় লাপিদ ও ওলমার্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫
  • ১১৮ Time View

ইসরায়েলের রাফাহ শহরে “মানবিক নগর” গড়ার নামে ফিলিস্তিনিদের ঘনত্ব শিবিরে বন্দী করার পরিকল্পনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক দুই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান নেতাদের এই পরিকল্পনাকে সরাসরি “ঘনত্ব শিবির” বা “কনসেনট্রেশন ক্যাম্প” বলেই অভিহিত করেছেন তারা।

রবিবার (১৪ জুলাই) এই প্রতিক্রিয়া জানান ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদ এবং এহুদ ওলমার্ট, যখন একই দিনে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন।

লাপিদ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন,

“রাফাহ শহরের ধ্বংসস্তূপে মানবিক নগর গড়ার পরিকল্পনা প্রতিটি দিক থেকেই খারাপ — নিরাপত্তা, রাজনীতি, অর্থনীতি এবং লজিস্টিক— কোনোভাবেই এটা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়।”

তিনি বলেন, “আমি এটাকে ঘনত্ব শিবির বলতে চাই না, তবে যদি কেউ চাইলে বের হতে না পারে, তাহলে সেটাই ঘনত্ব শিবির।”

ইসরায়েলি সরকারের দাবি অনুযায়ী, দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় ৬ লাখ গৃহহীন ফিলিস্তিনিকে প্রথমে সেখানে রাখা হবে। তবে শেষ পর্যন্ত সেখানে গাজার পুরো দুই মিলিয়নেরও বেশি জনগণকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

সেটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত কয়েক মাসে রাফাহ শহরে ধ্বংসের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে ১৫,৮০০ থেকে বেড়ে ২৮,৬০০ ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এই পরিস্থিতিকে “জাতিগত নিধনের (Ethnic Cleansing)” প্রক্রিয়া বলেই অভিহিত করেছেন এহুদ ওলমার্ট। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম The Guardian-কে তিনি বলেন:

“মানুষকে এভাবে সরিয়ে ‘মানবিক নগরে’ পাঠানো আসলে তাদের তাড়িয়ে দেওয়ার একটি কৌশল। তারা চায় না ফিলিস্তিনিরা টিকে থাকুক, বরং তাদের ধীরে ধীরে সরিয়ে দিতে চায়।”

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের বিষয়ক সংস্থার (UNRWA) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, এই পরিকল্পনা “দ্বিতীয় নাকবার” দিকে ইঙ্গিত করছে। তার ভাষায়,

“এটি মিসরের সীমানায় বিশাল ঘনত্ব শিবিরে পরিণত হবে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাস্তুচ্যুত হওয়া ফিলিস্তিনিদের জন্য এটা হবে আরেক দুঃস্বপ্ন।”

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বর্তমানে যে মাত্র একটি সংস্থাকে গাজায় খাদ্য সরবরাহ করতে দিচ্ছে, সেটি হলো Gaza Humanitarian Foundation (GHF) — এটি একটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত বেসরকারি সংস্থা। সংস্থাটি এমনকি ফিলিস্তিনিদের জন্য “ধারাবাহিক মানবিক ট্রানজিট ক্যাম্প” গড়ার পরিকল্পনাও করেছে বলে জানিয়েছে Reuters

GHF-এর তৈরি পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, গাজার জনগণকে “ডি-র‍্যাডিকালাইজ”, “রি-ইন্টিগ্রেট” এবং “চাইলে স্থানান্তরের জন্য প্রস্তুত” করা হবে। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, এটা আদতে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করারই কৌশল।

মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক ওমর রহমান বলেন,

“ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য হলো গাজা নামক ভূখণ্ডকে ধ্বংস করে ফেলা, ফিলিস্তিনি সমাজের কাঠামো ভেঙে দেওয়া এবং গণহারে জনগণকে সরিয়ে দেওয়া। খাদ্য না পেয়ে মরো, অথবা গুলি খাও — এই দুইয়ের মধ্যে প্রতিদিন ফিলিস্তিনিদের ‘পছন্দ’ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।”

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © arshinagar tv 2025
Design & Develop BY Coder Boss