ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনার মাত্রা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। কাশ্মীর সীমান্তে রাতের আঁধারে ‘ব্ল্যাকআউট’ মহড়া চালানোর পাশাপাশি পাকিস্তানমুখী চেনাব নদীর পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে নয়াদিল্লি— এমন দাবি তুলেছে ইসলামাবাদ, যা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের দ্বারস্থ হতে চলেছে তারা।
রোববার (৪ মে) রাতে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের ফিরোজপুর সেনানিবাসে ভারতীয় সেনাবাহিনী আধা ঘণ্টার জন্য ব্ল্যাকআউট মহড়া পরিচালনা করে। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের নির্দেশনা দেওয়া হয় সব ধরনের আলো নিভিয়ে রাখতে। সেনাবাহিনীর দাবি, এই মহড়া যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ব্ল্যাকআউট বাস্তবায়নের সক্ষমতা যাচাই ও প্রস্তুতি নিশ্চিত করতেই চালানো হয়েছে।
এছাড়া ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানে প্রবাহিত চেনাব নদীর পানির সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে। বাগলিহার বাঁধের মাধ্যমে এই পানি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি, কিশানগঙ্গা বাঁধ ব্যবহার করে ঝিলম নদীর প্রবাহেও নিয়ন্ত্রণ আনার পরিকল্পনা করছে নয়াদিল্লি।
এই পরিস্থিতিকে “সুস্পষ্ট আগ্রাসন” হিসেবে অভিহিত করে পাকিস্তান বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম ইফতিখারকে জরুরি বৈঠক আহ্বানের নির্দেশ দিয়েছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ভারতের সামরিক উসকানি, রাজনৈতিক বক্তব্য এবং সিন্ধু পানি চুক্তি লঙ্ঘনের বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলে ধরা হবে।”
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের একটি বাসে চালানো সশস্ত্র হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়। ভারত এই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর দিকে আঙুল তোলে। তবে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানায়।
সাম্প্রতিক পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ এবং কূটনৈতিক উত্তেজনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ককে আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে—বিশেষত এমন এক সময়ে, যখন উভয় দেশেই রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাগত চাপ বেড়ে চলছে।
Leave a Reply