চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাসের হার দুই দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন হওয়ায় উচ্চশিক্ষায় বড় ধাক্কা এসেছে। পাস করা সব শিক্ষার্থী স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হলেও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে প্রায় ১১ লাখ আসন ফাঁকা থাকবে, এমন আশঙ্কা করছে শিক্ষা কর্তৃপক্ষ।
দেশে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে মোট আসন রয়েছে ১৮ লাখ ৭ হাজার। কিন্তু এবার পাস করেছে মাত্র ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন শিক্ষার্থী। ফলে প্রায় ১০ লাখ ৮০ হাজার আসন ফাঁকা থেকে যাবে, যা দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার ভারসাম্যে বড় প্রভাব ফেলবে।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, যাচাই-বাছাই ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন এবং পরিকল্পনাহীনভাবে আসন বাড়ানোর কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তারা আসন পুনর্বিন্যাসের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রচলিত উচ্চশিক্ষার পরিবর্তে কর্মমুখী শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণে আগ্রহী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, “উচ্চশিক্ষা সবার জন্য নয়, বরং যাদের যোগ্যতা ও আগ্রহ আছে তাদের জন্য। কেউ টেকনিক্যাল বা স্বাধীন পেশায় যেতে পারে—এটিই হওয়া উচিত বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি।”
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) মনে করে, শিক্ষার্থী সংকট মানহীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের মানোন্নয়নে বাধ্য করবে। ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফয়েজ বলেন, “এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ভারসাম্যপূর্ণ হবে এবং মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি হবে।”
শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সংখ্যা নয়, বরং মানসম্মত শিক্ষা ও শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী মানবসম্পদ তৈরি করা।