দেশের উত্তরাঞ্চলজুড়ে চলমান তাপপ্রবাহ আগামী দুই দিন অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর বৃষ্টিপাত শুরু হলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে সারাদেশ থেকে তাপপ্রবাহ পুরোপুরি কমতে আরও অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
গেল কয়েকদিনের অসহনীয় গরমে জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত। দুপুর গড়াতে না গড়াতেই রাস্তাঘাট ফাঁকা, অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। শহরের মোড়ে মোড়ে দেখা যাচ্ছে লেবুর শরবত, ডাব, তালের রসসহ ঠান্ডা পানীয় বিক্রির ভিড়। গরমের তীব্রতায় হাসপাতালমুখী অনেক স্বজন কিংবা শ্রমজীবী মানুষ একটু স্বস্তির আশায় এসব পানীয়ের আশ্রয় নিচ্ছেন।
এক বিক্রেতা জানালেন,
গরম বাড়লেই বিক্রি বাড়ে। কিন্তু ডাব আর লেবু এখন বেশি দামে আনতে হয়। লাভ হচ্ছে কম, খরচ বেশি।”
তীব্র গরমের পেছনে মানুষের অসচেতনতা এবং অপরিকল্পিত উন্নয়নকেই দায়ী করছেন সাধারণ নাগরিকরা। একজন পথচারী বলেন, “নগরায়ন হয়েছে, কিন্তু পরিকল্পনা ছাড়া। গাছ নেই, জলাশয় নেই, প্রচুর ভবন। ফলাফল, গরম যেন দিন দিন অসহনীয় হয়ে উঠছে।”
একজন পরিবেশ কর্মী বলছেন,
প্রচণ্ড গরম শুধু প্রকৃতির খামখেয়াল নয়, এটি পরিবেশের প্রতিশোধ। নির্বিচারে গাছ কাটা, জলাভূমি ভরাট এবং নির্মাণকাজের ধোঁয়া—সব মিলিয়েই সৃষ্টি হচ্ছে এই বিপর্যয়।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ১২ মে’র দিকে দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ময়মনসিংহ, সিলেট, রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকার কিছু অংশে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বিভাগ বলছে, “বৃষ্টি ধীরে ধীরে বাড়বে। এরপর সাত থেকে আট দিনের মধ্যে সারাদেশেই তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে।”
তবে বঙ্গোপসাগর এখনো শান্ত থাকায় ঘূর্ণিঝড়ের তাৎক্ষণিক কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তাদের ভাষায়, “২০ তারিখের কাছাকাছি এসে আমরা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি এবং গতিপথ সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতে পারব।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তাপপ্রবাহকে ভবিষ্যতের প্রাকৃতিক নিয়ম হিসেবে না দেখে সচেতনতা এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিবেশ পরিকল্পনার মাধ্যমে মোকাবিলা করতে হবে।
Leave a Reply