ইসরাইলি কারাগার ও সেনা হেফাজত থেকে ৩০ ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দিয়েছে ইসরাইল, যাদের অধিকাংশের দেহেই রয়েছে নির্মম নির্যাতনের চিহ্ন—এমন তথ্য জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় ক্ষোভ ও শোক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো গাজা উপত্যকায়।
হামাসের হাতে নিহত দুই ইসরাইলি বন্দির মরদেহ ফেরত নেওয়ার একদিন পরই গাজায় এসব মরদেহ পাঠিয়েছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সর্বশেষ এই হস্তান্তরের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত মোট ২২৫টি ফিলিস্তিনির মরদেহ গাজায় ফেরত এসেছে।
তাদের অনেকের দেহে হাত-পা বাঁধা, আঘাতের দাগ ও পোড়ার চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয় সূত্রগুলো।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও, গাজার দক্ষিণাঞ্চল খান ইউনিস এবং উত্তরাঞ্চলের গাজা সিটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল, জানিয়েছে আল জাজিরা।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, এই হামলার লক্ষ্য ছিল “সন্ত্রাসী অবকাঠামো”।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, বোমা বর্ষণ হয়েছে ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকায়, যেখানে সাধারণ মানুষ বাস করছিলেন।
শুক্রবারের (৩১ অক্টোবর) এসব হামলায় অন্তত তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা।
শুজাইয়া এলাকায় ইসরাইলি গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত ও তার ভাই আহত হয়েছেন।
এছাড়া জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে গোলাবর্ষণে একজন নিহত হন এবং পরবর্তীতে আহত আরেকজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
গাজার বাসিন্দারা বলছেন, কাগজে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা থাকলেও বাস্তবে তা কার্যকর নয়।
খাদ্য, পানি ও আশ্রয়ের অভাবেতে হাজারো মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
আবারও সহিংসতা বাড়ার আশঙ্কায় অনেক পরিবার ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু করেছে তুরস্ক।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান জানিয়েছেন, সোমবার (৩ নভেম্বর) ইস্তাম্বুলে একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সেখানে গাজার যুদ্ধবিরতি, মানবিক সহায়তা ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হবে।
বৈঠকে অংশ নেবেন সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, জর্ডান, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
ফিদান বলেন, “গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবাহে ইসরাইলের বাধা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। তুরস্কের লক্ষ্য হচ্ছে যুদ্ধবিরতি ধরে রাখা ও একটি ‘গাজা টাস্কফোর্স’ গঠন করা।”