মস্কোয় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে টানা পাঁচ ঘণ্টার বৈঠকের পরও ইউক্রেনের ভূখণ্ড নিয়ে কোনো সমঝোতা হয়নি বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের বৈঠকের পর এমন মন্তব্য করেন ক্রেমলিনের শীর্ষ উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ।
উশাকভ বলেন, “এখনও কোনো আপস হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্র কিছু প্রস্তাব দিয়েছে, যা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।” তিনি আরও জানান, বৈঠকটি ‘গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ’ হলেও সামনে ওয়াশিংটন ও মস্কো—দুই জায়গাতেই আরও অনেক কাজ বাকি।
যুক্তরাষ্ট্র একটি নতুন শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনায় বসেছে, যা আগের ২৮ দফা খসড়ার আপডেট সংস্করণ। আগের প্রস্তাবটি ইউক্রেন ও পশ্চিমাদের কাছে রাশিয়াপন্থী বলে সমালোচিত হয়েছিল।
রাশিয়াও ইউক্রেন ও ইউরোপের পাল্টা প্রস্তাবকে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
বৈঠকের আগেই এক বিনিয়োগ ফোরামে পুতিন অভিযোগ করেন, ইউরোপীয় দেশগুলো ‘যুদ্ধের পক্ষে’ দাঁড়িয়েছে। তিনি হুমকি দেন, ইউক্রেনের বন্দর, জাহাজ ও ট্যাংকারগুলোর বিরুদ্ধে রাশিয়া আরও হামলা বাড়াবে।
তার বক্তব্যের জবাবে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেন, এটা পরিষ্কার যে পুতিন যুদ্ধ বন্ধ করতে চান না। “একদিন বলেন শীতকালেও লড়াই চালাবেন, আরেকদিন হুমকি দেন সামুদ্রিক নৌ–চলাচলে।”
আয়ারল্যান্ড সফরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধ থামাতে “মর্যাদাপূর্ণ শান্তি” প্রয়োজন।
তিনি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্ররা “ক্লান্ত হয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে”, আর এটিই রাশিয়ার লক্ষ্য।
ওয়াশিংটন ডিসিতে এক বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “অবস্থা খুব জটিল। আমাদের লোকেরা এখন রাশিয়ায় আছে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করতে।” তিনি যুদ্ধকে “এক বিরাট বিশৃঙ্খলা” বলে উল্লেখ করেন।
এদিকে রাশিয়া দাবি করেছে, তারা ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর পোকরোভস্ক দখল করেছে—যদিও কিয়েভ এ দাবি অস্বীকার করেছে।
২০২৫ সালে রাশিয়া আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুতগতিতে অগ্রসর হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
রাশিয়ার দখলে এখন ইউক্রেনের ১৯ শতাংশেরও বেশি ভূখণ্ড। earlier leaked peace draft অনুযায়ী, রাশিয়া যে শর্তগুলো চাইছে তার মধ্যে আছে—
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর আকার কমানো,
পুরো দোনবাসে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ,
জাপোরিঝিয়া ও খেরসনে রাশিয়ার উপস্থিতি স্বীকৃতি।
জেলেনস্কি পরিষ্কার করে দিয়েছেন—এ ধরনের দাবি মানা মানে “আত্মসমর্পণ”, এবং ইউক্রেনের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষা করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.